কনস্টেবল পদে নিয়োগ দুর্নীতি, প্রতিবাদে সামিল চাকরিপ্রার্থীদের ফের পুলিশি হেনস্থা

কনস্টেবল পদে নিয়োগ দুর্নীতি, প্রতিবাদে সামিল চাকরিপ্রার্থীদের ফের পুলিশি হেনস্থা

কলকাতা: পুলিশে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ফের পথে নামলেন রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদপ্রার্থীরা৷ পরীক্ষার ফলাফলে কারচুপি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা৷ কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল ২০১৯ সালে৷ তিন ধাপে পরীক্ষার পর গত ১৫ অক্টোবর পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়৷ প্রার্থীদের অভিযোগ, কাট অফ মার্ক বাড়িয়ে দিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করছে রাজ্য সরকার৷ শুধু এটুকুই নয়৷ মেইন পাস না করা প্রার্থীদের নাম কী করে তালিকায় উঠে এল সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা৷ 

আরও পড়ুন- বেসরকারি চাকরিতে স্থানীয়দের ৭৫% সংরক্ষণ, আসছে নতুন আইন

এদিন পথে নেমে শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রতিবাদ জানান কনস্টেবল পদের প্রার্থীরা৷ কিন্তু এর পরেও তাঁদের পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ৷ প্রতিবাদে সামিল এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘ফাইনাল মেরিট লিস্টে আমাদের কাটঅফ মার্কস ছিল ৩৮৷ ইন্টারভিউ হয় ১৫ নম্বরে৷ ইন্টারভিউয়ে পূর্ণ নম্বর পেলেও তা হয় ৫৩৷ কিন্ত চূড়ান্ত তালিকায় দেখা গেল মেরিট হয়েছে ৫৬৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হোক৷’’ অপর এক প্রার্থী বলেন, ‘‘আমারা জানতে পেরেছি কিছু প্রার্থী মেইন পাস না করলেও তালিকায় তাঁদের নাম এসেছে৷ আমরা এই দুর্নীতি মানতে পারছি না৷’’ 

আরও পড়ুন- ২০২১ সালের ছুটির তালিকা নবান্নের, ২১ জুলাই রাজ্যজুড়ে ছুটি!

বুধবার শহিদ মিনারের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন কয়েকশো কনস্টেবল পদপ্রার্থী৷ কিন্তু সেখানে তাঁদের পুলিশ বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাঁদের৷ চাকরি প্রার্থীদের বক্তব্য, আমরা মাস্ক পরে, স্যনিটাইজার নিয়ে, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছি৷ আমরা পুলিশ হওয়ার জন্যই এখানে এসেছি৷ কিন্তু আমাদের কোনও সহযোগিতা করা হচ্ছে না৷ গত মাসেও তাঁদের এভাবেই হেনস্থা হতে হয়েছিল রাজ্য পুলিশের হাতে৷ যাঁরা ভবিষ্যতে আইনের রক্ষক হতে চান, তাঁদের সামনে প্রশাসনই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ হচ্ছে ক্ষমতার আস্ফালন৷ পুলিশের এই আচরণে হতাশ পুলিশেরই চাকরিপ্রার্থীরা৷ তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের মতো বেকার যুবকরা চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আমাদের এই পরিস্থিতিটা বিচার করে দেখা হোক৷’’ এই চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেরই বয়স আবার পেরিয়ে যেতে চলেছে৷ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা চাকরি পাচ্ছে না৷ তাই সরকারের সুবিচারের অপেক্ষাতেই দিন গুণছেন তাঁরা৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 3 =

কনস্টেবল নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ, প্রতিবাদী প্রার্থীদের পুলিশি হেনস্থা

কনস্টেবল নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ, প্রতিবাদী প্রার্থীদের পুলিশি হেনস্থা

 

কলকাতা:  পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভে সামিল হলেন পরীক্ষার্থীরা৷ প্রার্থীদের অজান্তে রাতারাতি বদলে গেল কাট অফ মার্কস৷ সুকৌশলে ঘটে গেল এই কারচুপি৷ 

আরও পড়ুন- মাসিক ১.৫০ লক্ষ টাকা বেতনে খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগে নিয়োগ রাজ্যের

চাকরির পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র, নিয়োগের ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি, ফল প্রকাশ করে নিয়োগ না করার অভিযোগ এরাজ্যে নতুন নয়৷ এবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠল পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে৷ কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল ২০১৯ সালে৷ তিন ধাপে পরীক্ষার পর গত ১৫ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়৷ এর পরই সামনে আসে দুর্নীতি৷ প্রার্থীদের অভিযোগ, আচমকা কাট অফ মার্কস বাড়িয়ে দিয়ে বেকারদের চাকরি না দেওয়ার পন্থা নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ 

বিক্ষোভে সামিল এর চাকরি প্রার্থী বলেন, ২০১৯-২০ সালে কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি হয়েছে তার প্রমাণ তাঁদের কাছে রয়েছে৷ তিনি জানান, একজন জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থী প্রলিমিনারি, মেন পাশ করার তাঁদের ডাকা হয়েছিল ভাইবাতে৷ তখন ১৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়৷ এখানে প্রশ্ন হল ৩৮ পাওয়া একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ১৫-র মধ্যে ১৫ পেলে তাঁর মোট নম্বর হয় ৫৩৷ কিন্তু দেখা গেল কাট অফ মার্কস হয়েছে ৫৬৷ অর্থাৎ ১৫-এর মধ্যে ১৮ দেওয়া হয়েছে৷ এই বাড়তি ৩ নম্বর কোথা থেকে এল?  

আরও পড়ুন- একাধিক শূন্যপদে নিয়োগ করছে UCO ব্যাঙ্ক, আগামীকাল থেকে শুরু অনলাইন আবেদন

এদিকে প্রতিবাদে সামিল হতেই পুলিশ হতে চাওয়া ওই যুবকদের হেনস্থা হতে হল পুলিশকর্মীদের হাতেই৷ তাঁদের অভিযোগ, কতদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন এখনও পুলিশে ২৬ হাজার নিযোগ বাকি রয়েছে৷ অথচ মেন পাশ করার পরও চাকরি দেওয়া হচ্ছে না৷ চাকরি না পেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে তিন জন প্রার্থী৷ এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে তাঁদের একটাই প্রার্থনা, রাজ্যে আইনের শাসন কায়েম করার কারিগড় হওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক তাঁদের৷ 

পুলিশের কনস্টেবল পদে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল৷ প্রলিমিনারি এবং মোট তিনটি ধাপে পরীক্ষা দেওয়ার পর ১৫ নম্বরের ভাইবা পরীক্ষা হয়৷ এই পরীক্ষার পর যখন ফল প্রকাশিত হয়, তখন দেখা যায় আচমকা ১৫ নম্বর বেড়ে গিয়ে ১৮ নম্বর হয়েছে৷ এই অদ্ভূত নিয়মের ফাঁদে পড়ে কয়েক হাজার পরীক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে৷ চাকরি প্রার্থীদের দাবি, যাঁরা পরীক্ষায় পাশ করেছেন, অবিলম্বে তাঁদের চাকরি দিতে হবে৷ 

রাজ্যে প্রায় ৬০ হাজার কনস্টেবনের পদ ফাঁকা রয়েছে৷ কিছুদিন আগেই রাজ্যে ১ লক্ষ ৪০ হাজারের কিছু বেশি সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে৷ ফলে কনস্টেবল পদের যে চাহিদা ছিল, তা সিভিকদের দিয়ে পূরণ করা হচ্ছে৷ যাঁদের বলতে গেলে কোনও প্রশিক্ষণই নেই৷ এদিকে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় আচমকা ৩ নম্বর কাট অফ মার্কস বাড়িয়ে দেওয়া হল৷ 

আরও পড়ুন- মুক্তিসূর্য থেকে পোস্টার বয়? বিরোধীদের চক্রান্ত নাকি দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে ছিঁড়ল শুভেন্দুর ছবি

কেউ কেউ বলছেন, আসলে এই নিয়োগের পিছনে টাকার খেলা চলছে৷ একটা কনস্টেবলের চাকরির জন্য ১৮ লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছে৷ শুধু পুলিশের চাকরি নয়, প্রতিটি পরীক্ষায় নিয়োগের আগে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হচ্ছে৷ সোজাসুজি নিয়োগ প্রায় বন্ধ৷ যে টুকু নিয়োগ হচ্ছে তা পিছনের দরজা দিয়ে৷ প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নাম করেও গ্রামে গ্রামে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হচ্ছে৷ বহু যুবক রয়েছে যাঁরা টাকা দেওয়ার পরও চাকরি পাননি৷ এটাই রাজ্যের আসল রূপ৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 7 =