দুবাই: ক্রমেই বদলাচ্ছে সৌদি সমাজ৷ বোরখার আড়লে ‘কবুল’ বলার দিন ভুলে বন্ধনহীন চুক্তি ভিত্তিক বিয়েতে মজছে সৌদি আরব৷ এই ধরনের বিয়েকে বলা হয় ‘জাওয়াজ আল মিসইয়ার’ বা ‘ভ্রমণকারীদের বিয়ে’৷ ক্রমেই বাড়ছে ‘মিসইয়ার’ রেওয়াজ৷ যা নিয়ে চিন্তায় সৌদির ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা৷ তাঁদের মতে, এই ধরনের বিয়ের রেওয়াজ সমাজকে উশৃঙ্খল করে তুলছে৷
আরও পড়ুন- পাক ভূমিতে অবহেলিত শক্তিপীঠ, ইসলামাবাদ মুখ ফেরালেও ৩০ কোটি দান বালোচ সরকারের
প্রসঙ্গত, মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী বিয়ের আগে কোনও ভাবে লিভ ইন করা যায় না৷ বিয়ের আগে সহবাস মুসলিম ধর্মে অবৈধ৷ কিন্তু ‘মিসইয়ারে’র আড়ালে সহবাসেই মেতে উঠেছে সৌদি সমাজ৷ এই ধরনের বিয়েতে যে সকল শর্ত রাখা হয় তার মধ্যে অন্যতম হল, স্ত্রীর আবাস ও অর্থের দায়িত্ব থাকবে স্বামীর উপর৷ বিনিময়ে ঘর বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও তাঁর ঘরে ঢোকার অনুমতি পাবেন স্বামী৷ রীতি মেনে এই বিয়ে হলেও যে কোনও সময় তাঁরা একে অপরকে ছেড়ে যেতে পারবেন৷ তাই এই বিয়ের বিষয়টি গোপনেই থাকে৷ সাধারণত সুন্নি মুসলিমদের মধ্যেই এই ধরনের বিয়ের রেওয়াজ রয়েছে৷
সৌদির অনেকেই মনে করে থাকেন, যাঁরা বহু বিবাহে আগ্রহী, তাঁদের জন্য এই প্রথা একেবারে উপযুক্ত৷ এই বিয়েতে মহিলারাও পুরুষতান্ত্রিক নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ হন না। এই ধরনের বিয়ের মেয়াদ সাধারণত ১৪ থেকে ৬০ দিনের হয়ে থাকে৷ পরে আবার তাঁরা প্রথা মেনে বিয়ে করতেও পারেন৷ কিন্তু যাঁরা স্ত্রীর সম্পূর্ণ দায়িত্ব বইতে চাননা, তাঁরা ‘মিসইয়ার’-এই আগ্রহী৷ সাধারণত বহুগামী নারী ও পুরুষ সংসারের দায়িত্ব এরিয়ে এই ধরনের বিয়েতে আগ্রহ দেখিয়ে থাকে৷ বিধবা বা যাঁদের তালাক হয়ে গিয়েছে, সেই ধরনের মহিলা এই ধরনের বিয়েতে বেশ উৎসাহী বলেই জানা গিয়েছে৷
আরও পড়ুন- উড়ন্ত বিমান থেকে ঝাঁপ! কিন্তু কেন জানেন?
কিন্তু এই ধরনের বিয়েকে সাধারণত হালাল বলেই মনে করেন ধর্মপ্রাণরা৷ এক সৌদি কর্মকর্তার কথায়, তিনি নিজেও ‘মিসইয়ার’ সম্পর্কে রয়েছে৷ রিয়াধ-এর বাড়িতে এক ‘মিসইয়ার’ স্ক্রীও আছে তাঁর৷ পাশাপাশি পাকাপাকি বিয়েও করেছেন তিনি৷ সেই স্ক্রীর ঘরে রয়েছে তিন সন্তান৷ তিনি জানান, তাঁর এক বন্ধুর নাকি এমন ১১ জন ‘মিসইয়ার’ স্ত্রী রয়েছে৷ সৌদিবাসী এক মিশরীর বলেন, এই ধরনের বিয়ে আসলে খুবই সস্তা৷ এতে কোনও পণ লাগে না৷ কোনও দায়িত্বও বহন করতে হয় না৷