মোদীর বিরুদ্ধে ‘মমতাই বিকল্প মুখ’! ‘অপ্রস্তুত’ রাহুলে ঘোর আপত্তি তৃণমূলের?

মোদীর বিরুদ্ধে ‘মমতাই বিকল্প মুখ’! ‘অপ্রস্তুত’ রাহুলে ঘোর আপত্তি তৃণমূলের?

কলকাতা:  একুশের বিধানসভা ভোটে বিপুল সাফল্যের পর তৃণমূলের লক্ষ্য এখন দিল্লি৷ দিল্লির মসনদ বিজেপি’র হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে জোটের পথে এগোচ্ছে বিরোধী দলগুলি৷ কিন্তু কারা থাকবে এই জোটে? ইতিমধ্যেই দিল্লি গিয়ে সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আলোচনা হয়েছে অন্যান্য দলগুলির সঙ্গেও৷ কিন্তু কে হবে বিরোধী জোটের মুখ? এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে চাননি কেউই৷ 

আরও পড়ুন- ভবানীপুরে মমতার সমর্থনে প্রচারে নেমে চায়ের আসরে সুব্রত মুখোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে বলেছিলেন ‘আমি লিডার নই, ক্যাডার’৷ তাঁর কথায়, যেই বিরোধী জোটের মুখ হন না কেন, তাঁর প্রতি পূর্ণ সমর্থন থাকবে তৃণমূলের৷ কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ভবিষ্যৎ কী? রাহুলের ব্যর্থতায় মুখ ফেরাবে তৃণমূল? যদিও তৃণমূলের মুখপত্র বলছে, কংগ্রসকে বাদ দিয়ে জোটের কথা ভাবছে না দল৷ তবে তারা মনে করেন এখনও নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প মুখ হয়ে উঠতে পারেননি রাহুল গান্ধী৷ দেশে একমাত্র বিকল্প মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাই বিকল্প মুখ হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই প্রচার চালাবে তৃণমূল৷ 

ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট হলে উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে দিল্লি অভিযানের বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখান উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী তাপস রায়, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এবং সাংসদ শান্তনু সেন। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে তৃণমূল যখন ‘দিল্লি চলো’র প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন টাইমস ম্যাগাজিনে বিশ্বের সেরা ২০ জন রাজনীতিবিদের তালিকায় একই সঙ্গে উঠে এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদীর নাম৷ যা আরও একবার নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প মুখ হিসাবে ‘সিলমোহর’ দিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে৷ 

তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেন, ‘‘দেশে বিকল্প মুখের প্রয়োজন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমি রাহুল গান্ধীকে চিনি। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি যে তিনি এখনও নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প মুখ হয়ে উঠতে পারেননি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গোটা দেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাইছে। সমস্ত বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে মমতাকে বিকল্প মুখ হিসেবে তুলে ধরেই প্রচারে যেতে চাইব।”  সুদীপবাবু আরও বলেন, ‘‘সংসদীয় কমিটির কাজে গুজরাট ও গোয়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে অনেকের সঙ্গে কথাও হয়েছে৷ মানুষ বলছে, আমরা বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েছিলাম। বিজেপি হারায় আমরা খুশি। আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেশের হাল ধরতে হবে।”

অন্যদিকে, ত্রিপুরা নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সুর কুণাল ঘোষের গলায়৷ তিনি মনে করেন ২০২৩-এ ত্রিপুরায় সরকার গড়বে তৃণমূল৷ তার পর ২০২৪ –এ তৃণমূলকে বিকল্প শক্তির ভরকেন্দ্র করে বিজেপি’কে গদিচ্যুত করবে রাজ্যের শাসক দল৷ 

আরও পড়ুন-  স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ব্যাঙ্ক দিচ্ছে না? বেসরকারি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত রাজ্য

কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে তৃণমূলের আপত্তি না থাকলেও বিকল্প মুখ হিসাবে রাহুল গান্ধীর প্রতি তাঁদের সমর্থন নেই বললেই চলে৷ তৃণমূল মনে করে, রাহুলের সামনে সুযোগ ছিল৷ তিনি বারবার সুযোগ পেয়েছেন৷ কিন্তু প্রতিবারেই তিনি ব্যর্থ৷ তাই জোট হলে বিকল্প মুখ হিসাবে রাহুলে সমর্থন নেই তৃণমূলের৷ শাসক দলের মুখপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লিতে জোড় টক্কর হবে৷ সেই সঙ্গে রাজ্যগুলিতেও বিজেপি’র ভোট কমাতে হবে৷ আর মোদীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী মুখ হিসাবে তুলে আনতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধন্ত নেয়নি দল৷  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 3 =