নয়াদিল্লি: কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজধানীর সীমান্তে। পাঞ্জাব হরিয়ানা সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে অসংখ্য কৃষক নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য পারি দিয়েছেন দিল্লির উদ্দেশ্যে। প্রায় ৪ মাস ধরে কৃষকদের আন্দোলনের মুখে অনমনীয় অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্র সরকারও। এহেন কৃষক বিক্ষোভে যখন উত্তাল দিল্লি, তখনই উত্তরপ্রদেশ থেকে সামনে এল কৃষকের দুরবস্থার আরো এক চিত্র।
আরও পড়ুন- গুজরাট থেকেই সিবিআইয়ের অতিরিক্ত অধিকর্তা, নাম প্রবীণ সিনহা
দিনরাত পরিশ্রম করে উৎপন্ন করা ফুলকপির প্রতি কেজির জন্য জনৈক কৃষককে মাত্র এক টাকা দাম দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা, এদিন এমনটাই জানা গেছে বিশেষ সূত্রের খবরে। চরম হতাশায় নিজের উৎপাদিত প্রায় ১০ কুইন্টাল ফুলকপি রাস্তায় ফেলে দেন ওই কৃষক। জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেট কমিটির (APMC) লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা এদিন একজন কৃষককে ওই দাম প্রস্তাব করেন। আর তারপরেই ঘটে অপ্রীতিকর এই ঘটনা। রাজধানীতে কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটেই দেশের কৃষকের এই দুর্দশা ও হতাশার ছবি নিঃসন্দেহে বহন করবে আলাদা তাৎপর্য।
সূত্রের খবর, ওই কৃষকের নাম মহম্মদ সালিম। তিনি উত্তরপ্রদেশের জাহানাবাদ অঞ্চলের বাসিন্দা। ফুলকপির কেজি প্রতি মাত্র ১ টাকা দামের প্রস্তাব পাওয়ার পর নিজের উৎপাদিত সমস্ত ফুলকপিই রাস্তায় ছড়িয়ে দেন তিনি। কোনো টাকা না দিয়েই গরিব মানুষেরা যাতে তাঁর ফুলকপি নিয়ে যেতে পারেন করা হয় সেই ব্যবস্থা। বস্তুত, জাহানাবাদ থেকে এপিএমসির দফতরে যাতায়াত বাবদই এর থেকে বেশি টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই কৃষক।
আরও পড়ুন- আন্দোলন সমর্থন করায় রিহানা-গ্রেটাকে একহাত কেন্দ্রের, স্বাগত জানালো কৃষকরা
এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে সালিম জানিয়েছেন, “আমার আধ বিঘা মতো জমি আছে যেখানে আমি এবার ফুলকপির চাষ করেছিলাম। বীজ, উৎপাদন,সার ইত্যাদির জন্যেই আমার খরচ হয়েছে ৮০০০ টাকা। এছাড়া ফসল তোলা এবং যাতায়াত খরচ বাবদ চলে গেছে আরো অন্তত হাজার চারেক টাকা।” বর্তমানে বাজারে ফুলকপির দাম ১২ থেকে ১৪ টাকায় ঘোরাফেরা করছে, সুতরাং নিজের উৎপাদনের জন্য অন্তত ৮টাকা প্রত্যাশা করেছিলেন মহম্মদ সালিম। কিন্তু ১টাকা দেওয়ার কথা বললে আর হতাশা চেপে রাখতে পারেন নি। অত ফুলকপি বাড়ি ফিরিয়ে আনার টাকা বাঁচাতে রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।