‘পেগাসাস’-এ ‘হ্যাক’ একাধিক নেতা, সাংবাদিকদের ফোন, প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র

‘পেগাসাস’-এ ‘হ্যাক’ একাধিক নেতা, সাংবাদিকদের ফোন, প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র

নয়াদিল্লি: ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশ বরাবরই গোপনীয়তা রক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়ে এসেছে৷ কিন্তু সেই দেশেই আড়ি পাতা হল একাধিক বিরোধী দলনেতা, মন্ত্রী, ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিক, শিল্পপতি, সমাজকর্মী ও বিচারপতিদের ফোনে৷ তাঁদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ এই নিয়ে গতকাল সরগরম হয়ে ওঠে সর্বদলীয় বৈঠক৷ সরকারের দিকে একযোগে আঙুল তোলে বিরোধীরা৷ কিন্তু কী ভাবে এই ফোন হ্যাক করা হচ্ছে? 

আরও পড়ুন- ‘রাজভবন যেন পার্টি অফিস’, ইউপি-র সাংসদের অভিযোগে পাল্লা ভারী তৃণমূলের

এর নেপথ্যে রয়েছে পেগাসাস স্পাইওয়্যার৷ এটি ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র তৈরি একটি সফটওয়্যার৷ যা মূলত ফোনে আড়ি পাতার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ শুধু ফোনে কথোপকথনই নয় হোয়াটসঅ্যাপে কী লেখা হচ্ছে, সে বিষয়েও এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে জানা যায়৷ এমনকী যে ফোনটি হ্যাক করা হয়েছে সেই ফোনে কী তথ্য বা ছবি রয়েছে সেটাও দেখা যায়৷ অথচ যাঁর ফোন হ্যাক করা হয়েছে, তিনি কিছু বুঝতেই পারবেন না৷ ‘পেগাসাস’-এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী কয়েক হাজার মানুষকে নিশানা করা হয়েছিল৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে৷ এনএসও গ্রুপের দাবি, শুধুমাত্র সরকারি ক্রেতাদের কাছেই এই ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার  ‘পেগাসাস স্পাইওয়্যার’ বিক্রি করা হয়৷ 

২০১৯ সাল থেকে ‘প্রেগাসাস প্রজেক্ট’ নামে একটি তদন্ত শুরু করে ১৬টি সংবাদমাধ্যম৷ রবিবার সেই রিপোর্টের একটা অংশ প্রকাশিত হয়৷ জানা গিয়েছে, ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠিয়ে ফোনে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ইনস্টল করা হয়৷ হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস কল বা ভিডিয়ো কল করেও এই সফটওয়্যার ইনস্টল করা সম্ভব৷ অভিযোগ,  দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তিন জন বিরোধী নেতা-নেত্রী, সাংবাদিক, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, আমলা সহ অনেকেই এই হ্যাকিংয়ের শিকার৷ যদিও সরকার এই অভিযোগ মানতে নারাজ৷ কেন্দ্রের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘‘আমাদের দেশে বাক স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার৷ এই মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে সরকার দায়বদ্ধ৷ নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উপর নজরদারি চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন৷’’ 

আরও পড়ুন- শিশুদের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে করোনা! মারণ ভাইরাস থেকে শিশুদের সুরক্ষা কী ভাবে?

এই  বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা৷ তবে ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়ার স্ক্রিনশট প্রকাশ করেছে এএনআই৷ যেখানে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত সরকারের কাছে পাঠানো প্রশ্ন থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এটা একটা মনগড়া প্রতিবেদন৷ মনে হচ্ছে একই সঙ্গে তদন্তকারী, আইনজীবী ও বিচারকের ভূমিকা পালনের চেষ্টা চলছে৷’’ সরকারের তরফে আরও বলা হয়েছে, ফোনে আড়ি পাতার জন্য সরকারি অনুমতি লাগে৷ আইন মেনে তবেই আড়া পাতা হয়৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *