চামোলি: কেদারনাথের ভয়াবহ স্মৃতি উস্কে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভাসল উত্তরাখণ্ড৷ অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গায় ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে৷ নিখোঁজ ১৭০ জন৷ তবে যে ভাবে চামোলি জেলায় হিমবাহ ভেঙে গোটা এলাকায় তুষারধস নেমেছে তাতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
আরও পড়ুন- জম্মু কাশ্মীরে উড়বে ১০০ ফুট উঁচু তেরঙ্গা! অভিনব উদ্যোগ ভারতীয় সেনাবাহিনীর
উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে নন্দাবেদী হিমবাহ ভেঙে পড়ে৷ যার জেরেই এই প্রবল জলোচ্ছ্বাস৷ জলের তোড়ে পাঁচটি সেতু নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে৷ ভেঙে গিয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি৷ ক্ষতিগ্রস্ত এনটিপিসি’র পাওয়ার প্লান্ট৷ ঋষিগঙ্গার কাছে আরও একটি জলবিদ্যুৎ-এর প্লান্ট ভেঙে পড়েছে৷ জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এক যোগে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে৷ উদ্ধার কাজে নেমেছে আইটিবিপি জওয়ানরা৷ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অকুস্থলে ড্রাইভিং টিম পাঠিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী৷ আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ এই ঘটনার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেন, ‘‘সারা ভারত উত্তরাখণ্ডের পাশে আছে৷ সকলে উত্তরাখণ্ডের জন্য প্রার্থনা করছে৷’’
ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, হড়পা বানে সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে উত্তরাখণ্ডের তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্লান্টটি৷ আকাশপথে তোলা ছবি সেই ভয়াবহ দৃশ্য ধরা পড়েছে৷ তবে অক্ষত রয়েছে জোশীমঠ ও তপোবনের সংযোগকারী রাস্তাটি৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপত্যকার নির্মাণকাজ ও কুঁড়েঘরগুলি৷ নন্দাদেবী হিমবাহ থেকে পিপলাকোটি এবং চামোলি পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা৷
আরও পড়ুন- ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে গৃহবন্দির নির্দেশ কমিশনের
আইটিবিপি-র এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডের রেনি গ্রামের কাছে একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ায় কয়েকটি সীমান্ত পোস্টও ভেসে গিয়েছে৷ এই পোস্টগুলি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল বলেও তিনি জানিয়েছেন৷
রবিবারই চামোলিতে যান উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত৷ এই ঘটনায় নিহতদের পরিবার পিছু ৪লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে আরও ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে৷ গুরুতর আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে৷
চামোলিতে সেনার তিনটি চপার একসঙ্গে এয়ারলিফ্টের কাজ চালাচ্ছে৷ দুটি এমআই ১৭এস ও একটি ধ্রুব রয়েছে৷ প্রয়োজনে আরও হেলিকপ্টার আনা হবে বলেও জানানো হয়েছে৷ প্রায় ৬০০ সেনা বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে৷