বদলি নিয়ে অসন্তোষ, সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি পেশ শিক্ষক সংগঠনের

বদলি নিয়ে অসন্তোষ, সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি পেশ শিক্ষক সংগঠনের

কলকাতা: শিক্ষক বদলি ইস্যুতে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব রাজ্যের  অরাজনৈতিক শিক্ষক সংগঠন ‘অল পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’৷ এবার সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁদের দাবি দাওয়া তুলে ধরা হল৷ রাজ্যের সমস্ত ইচ্ছুক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, কমিশনার, শিক্ষা সচিব সহ অন্যান্য শিক্ষা আধিকারিকদের কাছে একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরল তাঁরা৷ 

আরও পড়ুন- বুলেটিন প্রডিউসার, সাব-এডিটর, ভিডিও এডিটর ও জেলা সাংবাদিক নিয়ো

সংগঠনের প্রথম দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব ঘোষণা অনুসারে দ্রুত সকল ইচ্ছুক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর ডিস্ট্রিক্ট ট্রান্সফার চালু করতে হবে। অভিযোগ, গত ২২ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মাধ্যমিক স্কুল স্তরে জেলা বদলি সংক্রান্ত যে তথ্য জানিয়েছিলেন তা বাস্তবে স্পেশাল গ্রাউন্ড ট্রান্সফার। এই স্পেশাল গ্রাউন্ড ট্রান্সফারের ৫,৫০২ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৩,৮৫২ জন আবেদনকারীর বদলি হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা স্তরে জেলা বদলি এখনও চালু হয়নি৷ 

তাঁদের দ্বিতীয় দাবি হল, বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে জেনারেল ট্রান্সফার৷ দূরত্ব ও অভিজ্ঞতাকে যোগ্যতামান বিবেচনা করে অনলাইন মাধ্যমে অবিলম্বে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। গত ২ নভেম্বর Wbsed অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এবং ২২ নভেম্বর স্কুল শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে সমস্ত প্রকার ট্রান্সফারের আবেদন জমা বন্ধের নোটিশ থাকলেও MIC দপ্তরে স্পেশাল গ্রাউন্ড হিসাবে জেনারেল ট্রান্সফারের আবেদন জমা পড়েছে। এই সংক্রান্ত কোন সুস্পষ্ট তথ্য প্রকাশিত হয়নি।  সকলের জন্য জেনারেল ট্রান্সফারও শুরু হয়নি।  

আরও পড়ুন- শুরু হচ্ছে উচ্চ প্রাথমিকের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া, বিজ্ঞপ্তি জারি করল SSC

তৃতীয়ত হল, শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা মতো এসএসসি অফিসে জমা দেওয়া মিউচুয়াল ফর্মের ভিত্তিতে গত ২রা নভেম্বর ৫১০ জনের রেকোমেন্ডেশন প্রকাশিত হলেও বাকি ফর্মের রেকোমেন্ডেশন লেটার এখনও প্রকাশিত হয়নি। অবিলম্বে তা প্রকাশ করতে হবে। 

চতুর্থ দাবি, অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফারের সুস্পষ্ট একটি নোটিফিকেশন অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে। পঞ্চম দাবি হল, অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক সেকশনের টিচারদের ট্রান্সফারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে নর্মাল সেকশনের  এইচএস-পিজি টিচারদের সঙ্গে মিউচুয়াল অপশন চালু করতে হবে। 

এছাড়াও বাল হয়েছে, মাদ্রাসার যে সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা  ২০১৩ সালের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ট্রান্সফার নোটিফিকেশনে আবেদনের সুযোগ পাননি তাঁদের পুনরায় আপডেট ভেকেন্সি অনুযায়ী নতুন করে জেনারেল ট্রান্সফার নোটিফিকেশন প্রকাশ করতে হবে৷ যাতে সকলে ট্রান্সফারের সুযোগ পান। 

সপ্তম দাবি, সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর ২ বছর চাকুরি অতিক্রম হলেই তাদেরকে অটোমেটিক কনফারমেশন দিয়ে পারমানেন্ট অ্যাপ্রুভাল দিতে হবে। অষ্টম দাবি হল, বর্তমানে চালু থাকা স্পেশাল গ্রাউন্ড ট্রান্সফার প্রক্রিয়া ও আবেদন পদ্ধতি নোটিফিকেশন মাধ্যমে  প্রকাশ করতে হবে৷ এছাড়া অনলাইন মাধ্যমে আবেদন জমার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও, স্বচ্ছতার সঙ্গে যোগ্য ও বিশেষ সমস্যা থাকা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সুযোগ দিতে হবে। 

আরও পড়ুন- ধাপে ধাপে ধাপ্পাবাজির অভিযোগ, ৩০ শে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি পার্শ্বশিক্ষকদের

দশম দাবি হল, অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফার পোর্টালে নর্মাল সেকশনে বিজ্ঞান শাখার বিষয়গুলির মিউচুয়াল অপশন সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে। একাদশ দাবি হল, চাকুরি জীবনে একাধিকবার মিউচুয়াল ট্রান্সফারের সুযোগ দিতে হবে। তাঁদের দ্বাদশ দাবি হল, ট্রান্সফারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে স্কুল থেকে মাদ্রাসা ও মাদ্রাসা থেকে স্কুলের ট্রান্সফার প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।

 
এ প্রসঙ্গে সংগঠনের সম্পাদক চন্দন গরাই বলেন, ‘‘বিদ্যালয় ও শিক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে ডিস্ট্রিক্ট ট্রান্সফার ও জেনারেল ট্রান্সফার সুষ্ঠু ও যথাযথ নোটিফিকেশন প্রকাশ করে অনলাইনে শুরু করতে হবে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − 6 =