কলকাতা: বেতন কাঠামো এবং স্থায়ীকরণের দাবিতে চলছে পার্শ্বশিক্ষকদের বিক্ষোভ আন্দোলন৷ শীত উপেক্ষা করেই টানা ৯ দিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে চলছে তাঁদের এই অবস্থান কর্মসূচি৷ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ধাপে ধাপে তাঁদের সমস্যার সমাধান করা হবে৷ পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য আসন সংরক্ষিত আছে৷ তাঁরা কেন এত কষ্ট করছেন? এমন নয় যে তাঁদের নেওয়া হচ্ছে না৷ রাজ্যের আর্থিক দিকটিও তাঁদের দেখতে হবে৷ বাস্তবচিত দৃষ্টিভঙ্গী নিতে হবে৷ কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যকে ‘ধাপে ধাপে ধাপ্পাবাজি’ বলেই কটাক্ষ করেছেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷ উনি ধাপে ধাপে কত জনকে নিয়োগ করেছেন তা শেতপত্র প্রকাশ করে জানাক।
আরও পড়ুন- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি, কীভাবে করবেন TET-এর আবেদন?
ভগীরত ঘোষ বলেন, গত বছর ওঁর প্রতিশ্রুতিতে আমাদের ২৮ দিনের অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছিলাম৷ কিন্তু উনি কথা রাখেননি। তাঁর কোথায় আমরা আর আস্থা রাখতে পারছি না। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের পর শিক্ষাবিদ সুবোধ সরকারও আমাদের সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ৪০ হাজার পার্শ্বশিক্ষক নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এদিন পার্শ্বশিক্ষকদের ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের আর কত ধাপ উঠতে হবে? তবে সরকার আমাদের কথা শুনবে৷’’ পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের অপর এক যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ‘‘উনি মিথ্যে কথা ছাড়া বলেন না৷ ভাওতা দিয়ে দফতর চালাচ্ছেন৷ শুধু পার্শ্বশিক্ষকরাই নয়, শিক্ষাজগতের সকলেই ওঁর উপর অসন্তুষ্ট৷ ভোটকে সামনে রেখে এই ধরনের বিবৃতি না দেওয়াই ভালো৷’’ দাবি পূরণ না হলে পার্শ্বশিক্ষকদের এই বিক্ষোভ চলবে বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ভগীরথবাবু বলেন, ধাপের কথা না বলে শিক্ষকদের পাওনা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হোক৷ তাঁর বক্তব্য, এক বছর ধরে মিথ্যে বলছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ ২০১১ সালে ৩ জুন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাবিনেটের যে সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে৷ এই ভাবে আর কতদিন প্রতিশ্রুতির শিকার হবেন তাঁরা? প্রশ্ন তুলেছেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷
আরও পড়ুন- ফের মামলার জটে জেরবার উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া, ফয়সালা ডিভিশন বেঞ্চে
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে পার্শ্বশিক্ষকরা আন্দোলন করছেন, অথচ সরকার নির্বিকার৷ পার্শ্বশিক্ষকরা পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের মতোই দায়িত্ব পালন করেন৷ অনেক সময় দেখা যায় একটা স্কুল বা কলেজ চলছে পার্শ্বশিক্ষকদের দিয়ে৷ ফলে অবিলম্বে তাঁদের দাবি পূরণ করা উচিত৷ ধাপে ধাপে সমস্যা সমাধানের কথা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি৷’’