কোচবিহার: চতুর্থ দফা ভোটে শীতলকুচিকাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য৷ এবার সেই শীতলকুচির পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেত কোচবিহারে পৌঁছলেন স্বয়ং রাজ্যপাল৷ পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখবেন তিনি৷ শীতলকুচির পাশাপাশি যাবেন মাথাভাঙা, দিনহাটাতেও৷ সেখানে আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন রাজ্যপাল৷
আরও পড়ুন- করোনায় নাকাল রাজ্য, অসহায়তার সুযোগে ‘গলা কাটছে’ অ্যাম্বুলেন্স!
এদিন কোচবিহার পৌঁছনোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘লুঠপাট, তোলবাজি গণতন্ত্রের জন্য ভয়ঙ্কর৷ রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস চলছে৷ আমি অনেক অপেক্ষা করেছি, অনেক চেষ্টা করেছি, অনেকবার তথ্য জানতে চেয়েছি, কিন্তু কোনও কিছুই জানানো হয়নি৷ সারা দেশের মানুষ আমাকে বলেছেন, রাজ্যপাল আপনি কী করছেন? আপনি কী ভাবে বাংলাকে রক্তরঞ্জিত হতে দিচ্ছেন? কী ভাবে মানুষ ঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে৷ মহিলা শিশুদের কিনা সহ্য করতে হচ্ছে৷’’ এই অবস্থায় তিনি নিজের দায়িত্ব থেকে সরে আসতে পারেন না৷ রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘‘অনেকেই বলছে, যাঁরা রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করেননি, তাঁদের অধিকারের উপর কুঠারাঘাত করা হচ্ছে৷ তাঁদের জীবন দিয়ে মত প্রয়োগের মূল্য চোকাতে হয়েছে৷’’
রাজ্যপালের কথায়, ভোটের আগে হিংসায় উস্কানি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এটা তারই জের৷ তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে একজন দায়িত্ববান, অনুভবী নেত্রী এহেন মন্তব্য করতে পারেন৷ মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী সর্বদা থাকবে না, আমরা সবাইকে দেখে নেব৷ এই ধরনের মন্তব্য শোভা দেয় না৷ এর পর উনি বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী সশস্ত্র পুলিশ৷ দলের কর্মীরা বিশেষত মহিলারা তাদের বিরোধিতা করবেন৷ সবচেয়ে বেশি দুঃখের বিষয় হল, সংবিধানকে উপেক্ষা করে, আইন লঙ্ঘন করে উনি হুঙ্কার দিয়ে যে সকল কথা বলেছিলেন ২ মে থেকে সেই তাণ্ডবনৃত্য শুরু হয়ে গিয়েছে৷’’ রাজ্যপাল জানান, এই পরিস্থিতিতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে তিনি পুলিশ অফিসারদের সতর্ক করেন৷ এমনকী পুলিশ আধিকারিক, স্বরাষ্ট্র সচিবকেও ডেকে রিপোর্ট চান৷ তবে সেই রিপোর্ট আজও তিনি পাননি৷ তাঁর কথায়, ‘‘গণতন্ত্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷ মানুষ তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত৷ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে৷ এর পরিস্থিতিতে নিজের পিঠ চাপড়ানো উচিত নয়৷’’
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর শিল্পনীতিকে হাতিয়ার করেই রাজ্যে শিল্পোন্নয়ন ঘটাবেন ‘সৈনিক’ পার্থ
তিনি আরও বলেন, কিছু সাংবাদমাধ্যম বলছে কলকাতা হাইকোর্ট সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছে৷ কোথায়? আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না৷ পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাকে যে চিঠি পাঠিয়েছিল, সেই জবাব আমি দিয়েছে৷’’ তাঁর কথায়, ইতিহাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিচার করবে৷ ইতিহাস রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কেও বিচার করবে৷ আধিকারিকদের হাতের মুঠোর রাখবেন না৷ সংবিধানের ঊর্ধ্বে কেউ নন৷