মাটির টানে গ্রামে ফিরলেন সিলিকন ভ্যালি স্টার, গড়লেন বিনা পয়সার স্কুল

মাটির টানে গ্রামে ফিরলেন সিলিকন ভ্যালি স্টার, গড়লেন বিনা পয়সার স্কুল

চেন্নাই: সারা দুনিয়ার কাছে তিনি জুহু কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা৷ তিনি ফোর্বসের সিলিকন ভ্যালি স্টার৷  যাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২.৫ বিলিয়ন ডলার৷ সানফ্রান্সিসকোয় বিলাসবহুল জীবন তাঁর৷ এত অর্থ প্রতিপত্তি থাকা সত্ত্বেও মাটির টানে সেই তিনিই ফিরলেন চেন্নাইয়ে নিজের ছোট্ট গ্রাম টেঙ্কাসিতে৷ শুরু করলেন নতুন সার্ট আপ৷ না, তবে কোনও আর্থিক উদ্যোগ নয়৷ বছর ৫৫-র শ্রীধর ভেম্বু গড়ে তুললেন বিনা পয়সার স্কুল৷

আরও পড়ুন- নিট পরীক্ষা দিতে পারেননি? শেষ সুযোগের ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের, রেজাল্ট কবে জানেন?

স্কুল খোলার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে জুহু কর্পোরেশনের আর্থিক লাভ ছিল ৩,৩০০ কোটি টাকা৷ ছিল ৫০ মিলিয়ন ক্লায়েন্ট৷ তামিলনাড়ুতেও খুলেছিল কিছু অফিস৷ তবে কোনও সিলিকন স্টার তাঁর চাকচিক্যে ভরা জীবন ছেড়ে ভারতের এক প্রত্যন্ত গ্রামে পা রেখেছেন, এমন ঘটনা বলতে গেলে চোখেই পড়ে না৷ শুধু তাই নয়, সনাতন ভাস্তি পরে সাইকেলে চেপে মাথালামপাড়াইয়ের পথে অবলীলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি৷ দেখে বোঝার উপায় নেই, ইনি একজন সিলিকন ভ্যালি স্টার৷ মাস ছয় আগে  লকডাউনের পর শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন৷ দু-তিন ঘণ্টার অবসর সময়ে তিনটি শিশুকে পড়ানো শুরু করেন তিনি৷ লকডাউনের সেই অভিজ্ঞতাকেই নতুন পর্যায়ে নিয়ে যান শ্রীধর ভেম্বু৷ শুরু করেন একটি স্কুল৷ তিনি জানান, এখন তাঁর স্কুলে রয়েছে ৫২ জন পড়ুয়া৷ রয়েছেন চার জন শিক্ষক৷ তাঁর স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়াই কৃষক ঘরের সন্তান৷ 

শ্রীধরের এই স্কুলে পড়তে গেলে লাগে না কোনও খরচা৷ উপরন্তু পড়ুয়াদের খাবার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে৷ তাঁর স্কুলে পরীক্ষার নম্বর বড় কথা নয়৷ তথাকথিত ডিগ্রিতেও বিশ্বাস করা হয় না৷ পড়াশোনাটাই শেষ কথা৷ ভাম্বু বলেন, ‘‘এই প্রজেক্টটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ আমি নিজেও এখন পার্ট টাইম শিক্ষকতা করছি৷ সকলে মিলে মডেল স্কুল গড়ে তোলার চেষ্টা করছি৷ প্রশ্নপত্র তৈরি করছি, প্রয়োজনীয় অনুমোদন আদায় করছি৷’’ তবে তিনি যে সিবিএসই বা অন্য কোনও বোর্ডের অ্যাফিলিয়েশন পাওয়ার চেষ্টা করছেন না, সে কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন৷ 

আরও পড়ুন- আরও কমছে দশম-দ্বাদশের সিলেবাস, পিছতে পারে CBSE-CISCE-র বোর্ড পরীক্ষা

এই স্কুলই এখন শ্রীধরের কাছে নতুন মন্দির৷ তাঁর কথায়, শিক্ষকতাই এখন তাঁর নতুন পরিচয়৷ এখানে বাচ্চাদের বয়সের ভিত্তিতে পৃথকীকরণের চেয়ে, তারা কী জানে তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়৷ এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষিকারাও অনেক দূর থেকে এখানে পড়াতে আসেন৷ সেক্ষেত্রেও একটা সমস্যা রয়েছে৷ সব মিলিয়ে এটা কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে চলেছেন শ্রীধর৷   
  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 12 =