কলকাতা: কথা ছিল ব্রিগেডের ময়দানে উঠবে তরুণ তেজস্বীর ঝড়৷ কিন্তু গতকাল তিনি ব্রিগেড সমাবেশ যাননি৷ বরং সোমবার দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আজ বিকেল চারটে নাগাদ নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠকে বসেন আরজেডি প্রধান তেজস্বী যাদব৷ নির্বাচনী সমঝোতা নিয়েই ছিল এই বৈঠক৷ আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের শরিক হয়েই লড়তে চায় আরজেডি৷ পূর্ণশক্তি দিয়ে সমর্থন জানাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে৷
আরও পড়ুন- ‘ফিটনেস ফ্রিক’ রাহুল! ঝড়ের গতিতে পুশ-আপস, তরুণীর সঙ্গে নাচ! (ভিডিও)
এদিন মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর লালু-পুত্র বলেন, ‘‘শুরু থেকেই দিদির প্রতি আমাদের সম্মান রয়েছে৷ আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে৷ গোটা দেশে যে পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাতে গণতন্ত্র সঙ্কটের সম্মুখীন৷ বাংলায় অনেক হিন্দিভাষী মানুষ আছেন৷ বিহার-ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশের বহু মানুষ এ রাজ্যে রয়েছেন৷ নির্বাচনের আগে আমারা কী ভূমিকা পালন করব, তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল৷ আমরা জানিয়ে দিতে চাই রাষ্ট্রীয় জনতা দল সুপ্রিমো লালুজি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পূর্ণ সমর্থন করবেন৷’’
বিজেপি’কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তেজস্বী বলেন, ‘‘বাংলায় আমাদের যতটুকু শক্তি রয়েছে, ততটা দিয়েই লড়াই করব৷ যেখানে প্রয়োজন হবে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াব৷ দেশকে ভেঙে ফেলার শক্তিকে রুখতে হবে৷ সাম্প্রদায়িক শক্তির পথ রুদ্ধ করাই আমাদের লক্ষ্য৷ ওঁনারা ক্ষমতায় আসার জন্য অনেক স্বপ্ন দেখছেন৷ কিন্তু সেই স্বপ্ন কখনই পূরণ হবে না৷’’ তেজস্বী আরও বলেন, ‘‘সারা দেশে বাংলার অনন্য পরিচিতি রয়েছে৷ বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, ভাষা আছে৷ এই মূল্যবোধকে বাঁচাতে হবে৷ গণতান্ত্রিক সরকারকে বাঁচাতে হবে৷’’
বিহারে বিজেপি’র ভূমিকা নিয়েও এদিন আক্রমণ শানান লালু-পুত্র৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশের মানুষকে ঠকানোর কাজ করে বিজেপি৷ বিহার ভোটের আগে বিজেপি’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ২০ লক্ষ কর্ম সংস্থান করা হবে৷ অথচ এতদিনে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা বা বিশেষ প্যাকেজ পর্যন্ত দিতে পারেনি৷’’ এছাড়াও লকডাউনে হিন্দিভাষী শ্রমিকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে দেশের মানুষ তা দেখেছে৷ করোনাতে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার চেয়ে বেশি মানুষ পথ চলতে গিয়ে মারা গিয়েছেন৷ ট্রেনে কাটা পড়েছেন৷ কিন্তু করোনাকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কাজ করেছেন, তা প্রশংসারও ঊর্ধ্বে৷ সকলের পাশে উনি দাঁড়িয়েছেন৷
আরও পড়ুন- BREAKING: ‘চালাকি করে জিততে দেয়নি বিহারে’, তেজস্বীকে আশীর্বাদ করলেন মমতা
তেজস্বীর আবেদন, বিহারের মানুষদের একজোট হতে হবে৷ কারণ বিহারের মানুষকে ঠকিয়েছে ডবল ইঞ্জিন সরকার৷ তাঁর তোপ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা সব কাজ ছেড়ে বাংলা আর বিহারে ঘুরছে৷ সব কিছু বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে৷ তাই পূর্ণশক্তি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানোর চেষ্টা করবে আরজেডি৷ এদিকে বৈঠকের পর মমতা বলেন, তেজস্বী একজন যুব নেতা৷ উনি বিহারে খুব ভালো কাজ করেছেন৷ বিহারে আরজেডিই জিতত৷ কিন্তু চালাকি করে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি৷ তবে আজ হোক বা কাল, বিহারে তেজস্বীর সরকার গঠিত হবেই৷ আমার আশীর্বাদ ওঁর সঙ্গে আছে৷ রাববিজি ও লালুজি দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেন তিনি৷