নন্দীগ্রাম: নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ১৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে শহিদ স্মরণ সভা থেকে ফের জল্পনা উস্কে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ বড়সড় ইঙ্গিত দিলেও কাটল না ধোঁয়াশা৷ আগামী দিনে তাঁর পরিকল্পনা কী, রাজনীতির মঞ্চ থেকেই মিলবে তাঁর জবাব৷ সাফ জানিয়ে দিলেন শুভেন্দু৷
আরও পড়ুন- খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রণে মোদীকে চিঠি ক্ষুব্ধ মমতার
২০০৭ সালে রক্তাক্ত সূর্যদয়ের দিন যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছিলন, তাঁদের স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানিয়েই এদিনের সভা শুরু করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা শুভেন্দু অধিকারী৷ আজ থেকে ১৩ বছর আগে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন নন্দীগ্রামের মুক্তিসূর্য৷ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি গড় চক্রবেরিয়ার হুতামোড়ে প্রথম আন্দোলন শুরু হয়েছিল৷ এর পর দিন ৪ জানুয়ারি রাত্রি ১১টার পর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই ভূমি উচ্ছেদ কমিটি৷ চান্দবাড়ির ইয়াতিমখানায় বসে তৈরি হয় এই কমিটি৷ ৫ জানুয়ারি গড়চক্রবেরিয়ার মাঠে হয়েছিল লক্ষ মানুষের সমাবেশ৷ তিনি বলেন, সেই সময় সংবাদমাধ্যম নন্দীগ্রামের ছবি তুলে না ধরলে বিশ্বের মানুষ অত্যাচারীদের রূপ দেখত পেত না৷ রাজ্যের সৃজনশীল মানুষরা তাঁদ্র হৃদয় দিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল৷ ১৩ বছর ধরে এই সভা হচ্ছে৷ এই কর্মসূচি নতুন নয়৷ বহু মায়ের সম্ভ্রম লুন্ঠিত হয়েছিল৷ বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই আন্দোলন আমরা জয়ী হয়েছিলাম৷
পুরনো দিনের স্মৃতিতে ফিরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘ ২০০৩ সালে যুবনেতা হিসাবে নন্দীগ্রামে এসেছিলাম৷ এর কয়েক দিন পরেই অমিয় মাইতির বেকারিতে আগুন লাগানো হয়েছিল৷ সেদিনও এসেছিলাম৷ এখানকার প্রধান অশোক মণ্ডলকে মেরে হাত পা ভেঙে ফেলা দেওয়া হয়েছিল, সেদিনও এসে তাঁকে উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম৷ ২০০৩ সালের গল্প৷ আমি নতুন লোক নই৷ চেনা বামনের পৈতে লাগে না৷ আমি ক্ষমতার দম্ভ কোনও দিনও দেখাইনি৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে এসে লড়াই করেছি৷ এই অন্দোলন শুভেন্দু অধিকারীর আন্দোলন নয়৷ এই আন্দোলন কোনও ব্যক্তির নয়৷ এটা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত মানুষের আন্দোলন৷ সম্মিলিত শক্তির আন্দোলন৷’’
আরও পড়ুন- আলু-পিঁয়াজের দামে আগুন! হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
গোকুলনগরের মঞ্চ থেকে এদিন আরও একবার ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়ে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ তিনি বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম থেকে রাজনীতির বিশ্লেষকরা অপেক্ষা করে রয়েছেন৷ আমি কী করব তা জানার জন্য তাঁরা অধীর ভাবে আগ্রহী৷ তবে এর জবাব দেব রাজনীতির মঞ্চ থেকে৷ আমার মত কী, পথ কী, চলার পথ কোথায় স্বচ্ছন্দ্য, কোথায় গর্তে ভরা, কোথায় আমি হোঁচট খাচ্ছি, কোন রাস্তা দিয়ে হাঁটলে স্বাভিক পথে হাঁটতে পারব, তার উত্তর দেব রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে৷ এই মঞ্চ থেকে নয়৷ এই পবিত্র মঞ্চে রাজনীতি করি না৷ করব না৷’’ তবে যাওয়ার আগে তিনি তিনি নন্দীগ্রামের মানুষকে বলে যান, ‘‘লড়াইয়ের মাঠে দেখা হবে৷ রাজনীতির মঞ্চে দেখা হবে৷’’