কলকাতা: ইঙ্গিতটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন নয়তো রাজ্যগুলিকে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হোক৷ খাদ্যদ্রব্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন, অথবা রাজ্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হোক, এই মর্মে আজ মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিলেন প্রধানমন্ত্রীকে৷ এই মর্মে আজ মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিলেন প্রধানমন্ত্রীকে৷ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি হাস্যকর, দাবি বামেদের৷ আলুতেও ‘কামটামি’ চলছে, অভিযোগ বিজেপির৷ হিমঘর তো রাজ্যের অধীনে, সেখানে কেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না? প্রশ্ন কংগ্রেসের৷
আলু, পিঁয়াজ, ডালের মতো একাধিক কৃষিপণ্য থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য তালিকা থেকে আগেই বাদ দিয়েছিল কেন্দ্র৷ এই নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক৷ কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী, এই সমস্ত কৃষিপণ্যে আর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না রাষ্ট্রের৷ যদি সেই কৃষি পণ্যের দাম ৩ থেকে ৪ গুণ দাম বৃদ্ধি হয়, তখন পদক্ষেপ করতে পারবে সরকার৷ কেন্দ্রীয় এই আইনের বিরুদ্ধে আরও একবার সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলায় অনিয়ন্ত্রিত আলু, পিঁয়াজের মতো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে অবিলম্বে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আর তা না হলে দাম নিয়ন্ত্রণে পূর্ণ স্বাধীনতা রাজ্যকে দেওয়া হোক বলে সওয়াল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইতিমধ্যেই পিঁয়াজ মজুতের উপর সীমা বেঁধে দিয়েছে রাজ্য৷ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, কেন্দ্রের নয়া তিন কৃষি আইনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মজুতদারি বেড়ে গিয়েছে৷ আর তার জেরে ডাল, সবজি, ভোজ্য তেলের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া৷ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ৩ আইনের কুফল কৃষক ও জনতার উপর পড়েছে৷ নয়া আইনে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে৷ নয়া আইনে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয় বলে প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর আর্জি, হয় কেন্দ্র মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করুক অথবা রাজ্যকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দিক৷ তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পরিস্থিতি৷ প্রধানমন্ত্রীকে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা৷
মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপকে হাস্যকর বল দাবি করেছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী৷ তাঁর দাবি, আলু, পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে দায় কেন্দ্র সরকারের উপর দায় চাপানো, এর থেকে বড় হাস্যকর বিষয় হতে পারে না৷ কেন্দ্রের আইন চালুর পর অন্য রাজ্যগুলি দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি? এই নিয়ে রাজ্য কেন বিধানসভায় বিল আনার ব্যবস্থা করল না? প্রশ্ন সুজনের৷ রাজ্যের ব্যর্থতা ঢাকতে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানিয়েছেন বলেও মত প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের লোকসভা দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷ রাজ্য আলু, পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ৷ হিমঘরগুলি রাজ্য সরকারের অধীনে৷ তাহলে সেখানে কেন হস্তক্ষেপ করছেন রাজ্য সরকার? আলু, পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার অর্থ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা৷ মত অধীর চৌধুরীর৷
কৃষক আলু বিক্রি করছে ৫টাকায়৷ বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়৷ মাঝে ২৫ টাকা কালীঘাট লিমিটেড কোম্পানির অ্যাকাউন্টে চলে যায়৷ বাকিটা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের পকেটে, এমনই বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর৷ আলুর দাম বৃদ্ধির পিছনে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন খোদ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ হলদিয়ার জনসভার থেকে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে আলু উৎপাদন হয়৷ বাইরে থেকে আসে না৷ তাহলে কেন বেশি দামি সাধারণ মানুষকে কিনতে হচ্ছে আলু? আসলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তৃণমূল মোটা অংকের কাটমানি নিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষ৷ শাসক-বিরোধী শিবিরের দায়-পাল্টা দায় এড়ানোর সৌজন্যে চড়া দামে খাদ্যদ্রব্য কিনতে নবাধ্য হচ্ছেন সাধারণ জনতা৷ চিঠি চালাচালিতেই দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব? না কি শুধুই রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কৌশল? প্রশ্ন জনতার৷