বনগাঁ: বনগাঁর জনসভা থেকে ফের নাগরিকত্ব ইস্যুতে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলার মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার অধিকার কেন্দ্রের নেই বলে সুর চড়ালেন তিনি৷
আরও পড়ুন- নজরে একুশ! মমতা গড়ে আজ সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে নাড্ডা
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ এপার বাংলায় এসেছে৷ তাঁদের সাদরে গ্রহণ করা হয়েছে৷ নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য নতুন করে সার্টিফিকেটের কোনও প্রয়োজন নেই৷ আপনারা সকলে এ দেশের নাগরিক৷ তাঁর কথায়, ‘‘সিএএ বলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে৷ ক্যা-ক্যা, কা-কা করে প্রতারণা চলছে৷’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই নিয়ম একবার চালু হলে ঠাকুমার, ঠাকুর দাদার জন্ম তারিখ জানতে চাওয়া হবে৷ দিতে পারবেন তো? অথচ কোনও কিছু জানতে না চেয়েই রাজ্য সরকার আপনাদের সকলকে নাগরিকত্বের অধিকার দিয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বলে যাচ্ছি, আপনারা সকলে নাগরিক৷ মতুয়ারা সবাই এদেশের নাগরিক৷ কারও দয়ায় নতুন করে নতুন সার্টিফিকেট পাওয়ার দরকার নেই৷’’
তিনি আরও জানান, যাঁরা চার-পাঁচ বছর আগে এসেছিলেন তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা ছিল৷ আগে জেলা শাসক তাঁদের সার্টিফিকেট দিতেন৷ এখন জেলা শাসকের হাত থেকে সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ উদ্বাস্তু সম্পর্কে পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়েও দেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উদ্বাস্তুরা বাইরে থেকে এসে যখানে থাকেন, তাকে উদ্বাস্তু কলোনি বলে৷ বাংলায় রাজ্য সরকারের অধীনে ৯৪টি উদ্বাস্তু কলোনি ছিল৷ প্রতিটি কলোনিকে আইনত স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ তাঁরা পাট্টাও পেয়ে যাবেন৷ মন্ত্রিসভা এই কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে৷
আরও পড়ুন – মুকুলের বাড়িতে শীলভদ্র দত্ত! সাক্ষাতের কথা অস্বীকার করলেন দুজনেই
রাজ্যে আরও এক ধরনের কলোনি রয়েছে৷ কিছু মানুষ রেলের জায়গায় বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও জায়গায় বসতি গড়েছেন৷ এই ধরনের আরও ২৫০টি কলোনি রয়েছে রাজ্যে৷ তাঁদের সকলকেই উদ্বাস্তু ঘোষণা করে এদেশের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ কেউ উদ্বাস্তু কলোনি থেকে কাউকে উৎখাত করতে পারবে না৷ রাজ্যে কে থাকবে সেটা রাজ্য সরকার ঠিক করে৷ কেন্দ্র নয়৷ তাই কোনও এনআরসি, এনপিআর, করতে দেওয়া হবে না৷ তিনি বলেন, আমরা সবাই নাগরিক৷ আমি নিজেই মায়ের জন্ম তারিখ বলতে পারব না৷ আপনারা কী ভাবে বলবেন৷ বাংলা থেকে বাংলার মানুষদের তাড়াতে চায় বিজেপি৷ বাংলাকে গুজরাত বানাতে চায়৷
কাস্ট সার্টিফিকেট নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে এই সার্টিফিকেটে পেতে সময় লাগত৷ এখন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে বলা হয়েছে জন্মগত ভাবে বাড়িতে যদি একজন সদস্যেরও সার্টিফিকেট থাকে তাহলে সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে তাঁকে কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হবে৷