কেন হচ্ছে না SSC-TET পরীক্ষা? শিক্ষক নিয়োগ বিতর্কে নয়া যুক্তি দেবাংশুর

কেন হচ্ছে না SSC-TET পরীক্ষা? শিক্ষক নিয়োগ বিতর্কে নয়া যুক্তি দেবাংশুর

কলকাতা:  আরও একবার টেট প্রসঙ্গে বেফাঁস মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের৷ মীরাক্কেল খ্যাত সৌরভ পালোধির টেট নিয়ে করা প্রশ্নে বিরোধীদের কঠগড়ায় তুললেন তিনি৷ এদিন সৌরভ তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, টেট কেন হয় না? এর জবাবে দেবাংশু বলেন, টেট নিয়ে বামপন্থীরা বারবার মামলা ঠুকছে৷ তাই নেওয়া যাচ্ছে না টেট৷

আরও পড়ুন- ‘এখানে নোংরা রাজনীতি হচ্ছে, আগে জিতে নাও, সব করে দেব’, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

এদিন দেবাংশু বলেন, বিরোধী দলগুলি বিশেষ বামপন্থীরা বারবার টেট নিয়ে অভিযোগ তুলেছে৷  তাঁদের বক্তব্য আমাদের সময় প্রত্যেক বছর টেট হত, কিন্তু এখন হয় না৷ আসলে যে দু’তিন বার টেট হয়েছে, তাতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের আবদুল মান্নান এবং বামফ্রন্টের বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বারবার আদালতে মামলা করেছে৷ মামলা করার জন্য আদালতের তরফে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে৷ এর ফলেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে৷ 

 

আদালতেক স্থগিতাদেশের ফলে এক বছরে যত ছেলে মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তাদের নিয়োগ ওখানেই স্থগিত হয়ে যায়৷ পরে আবার পরীক্ষা নেওয়ার সময় সরকারের সমনেও নানা বিভ্রান্ত তৈরি হয়েছে৷ যত বার টেট নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে ততবার মামলা করেছে আবদুল মান্নান ও বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য৷ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, টেটে কোনও দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি৷ এর পরেও বিভিন্ন ইস্যুতে খামতি খুঁজে বারবার মামলা করা হয়েছে৷ আদালতে কোনও মামলা হওয়া মানেই তা দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ৷ কিন্তু টেট প্রতি বছর নিতে হয়৷ একটা বছরটা যদি দ্বিতীয় বছরের ঘাড়ে চেপে যায় তাহলে সমস্যা তো হবেই৷ 

 

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও এখনও পর্যন্ত শূন্যপদ কত, পরীক্ষার দিনক্ষণ জানাতে পারেননি রাজ্য৷ এদিন দেবাংশু বলেন, ২০১৭ সালে টেটের মামলা করা হল৷ আদালত স্থগিতাদেশ দিল৷ ওই বছর যাঁরা পাশ করলেন, তাঁদের নিয়োগও স্থগিত হয়ে রইল৷ ধরে নেওয়া যাক, ২০১৮-১৯ সালে পরীক্ষা হল৷ এর ফলে ২০১৭-১৮ দু’বছরই চাপল ২০১৯ এর ঘাড়ে৷ এই অবস্থার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিই দায়ী৷ তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছে৷ 

আরও পড়ুন- হাওয়ায় ছড়াচ্ছে করোনা, সতর্কতা মুখ্যমন্ত্রীর! মাস্ক নিয়ে কড়া নির্দেশ

 

আপার প্রাইমারি টেট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দেবাংশু বলেন, বাম আমলে তো কোনও লিখিত পরীক্ষাই হত না৷ শুধুমাত্র ইন্টারভিউ হত৷ ফলে খুব পরিচিত কমরেড বা শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছের লোকজন ঢুকে পড়তেন চাকরিতে৷ তখন মুখ দেখে পরীক্ষা হত৷ এখন লিখিত পরীক্ষায় আগে উত্তীর্ণ হতেই হবে৷ এখানেই তো দুর্নীতির জায়গা অর্ধেক হয়ে গেল৷ তার পর হয় ইন্টারভিউ৷  

 

তাঁর কথায়, আগে প্রতিবছর টেট হওয়ার পিছনে আরও একটা কারণ ছিল৷ বামপন্থী লোক বা কমরেড যাঁরা নির্বাচনে খাটতেন তাঁদের একটা নিয়োগ দেওয়া৷ এখন টেটের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িয়ে নেই৷ তবে দেবাংশুর আশ্বাস, সমস্ত দফতরে নিয়োগ হচ্ছে৷ শিক্ষকদের নিয়োগের বিষয়টি একটু গুছিয়ে নিতে পারলেই তা ফের স্বাভাবিক হবে৷ বাংলা ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছে৷ এই পরিসংখ্যান আরও কমবে৷ ২০২১ এ আবার ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল৷ তৃণমূল ক্ষমতায় এলে পেনশনও উঠবে না, আর সরকারি চাকরির ক্ষেত্রও ছোট হয়ে যাবে না৷ পাবলিক ইউনিট বেঁচেও দেব না সরকার৷ 

এদিন আরও এক বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন দেবাংশু৷ তিনি বলেন, আসলে আমরা সবাই বামপন্থী৷ সেখানে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে আসল বামপন্থার পরিচয় কে দিচ্ছে৷ বামপন্থীরা এটাই চাইতেন সরকার আরও বেশি করে ব্যবসা করুক৷ মানুষের কাজ হোক৷ লাভ না রেখে সাধারণ মানুষকে বেতন দিক৷ এটাই হচ্ছে আমাদের রাজ্যে৷ প্রত্যেকটা সরকারি ক্ষেত্র ভালো কাজ করছে৷ সেই জন্যই বেকারত্বের হার কমেছে৷ 

আরও পড়ুন- প্রশাসনিক বৈঠকে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘কী হয়নি বলুন তো’?

এর আগেও একবার টেট নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল দেবাংশুকে৷ তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘‘এসএসসি কবে হবে ভাই? বুড়ো হয়ে গেলাম তো৷’’ এর উত্তরে দেবাংশু বলেছিলেন, ‘‘বুড়ো যদি হয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপাতত বার্ধক্যভাতার জন্য আবেদন করতে পারেন৷ এটুকুই বলতে পারি৷ যাক, Jokes A part!’’ দেবাংশুর এই উত্তরে বেজায় চটেছিলেন চাকরি প্রার্থীরা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − six =