‘এখানে নোংরা রাজনীতি হচ্ছে, আগে জিতে নাও, সব করে দেব’, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

‘এখানে নোংরা রাজনীতি হচ্ছে, আগে জিতে নাও, সব করে দেব’, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

ঝাড়গ্রাম: লক্ষ্য ২০২১৷ আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই এগোচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায়৷ বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দলীয় নেতাদের লড়াই করার উৎসাহ জুগিয়ে গেলেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একবার হেরেছ বলে মন খারাপ করবে না৷ মন দিয়ে কাজ করে যাও৷’’ 

আরও পড়ুন- প্রশাসনিক বৈঠকে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘কী হয়নি বলুন তো’?

এদিনের বৈঠকে রাস্তা তৈরির প্রসঙ্গে উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে জিতে নাও, তার পর যা যা বাকি আছে সব করে দেব৷’’ তিনি বলেন, এখন হাতিতে মারা গেলে আড়াই লক্ষ টাকা এবং একজনকে চাকরি দিচ্ছে রাজ্য সরকার৷ এই এলাকাতে এমন ঘটনা আকছাড় ঘটে৷ আবার এক সময় মাওবাদীদের হাতে অপহৃত, যাঁদের এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি সেই সকল নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা এবং একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করা হয়েছে৷ এই সমস্ত বিষয়গুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে হবে৷ 

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ভোটের সময় বাইরে থেকে টাকা নিয়ে এসে এলাকাটা কিনে নিয়ে যাবে, আর তারপর মাওবাদীদের  ঢুকিয়ে দেব, তা যেন না হয়৷ অনেক কষ্ট করে রক্তের জায়গায় শান্তি নিয়ে এসেছি৷ যখন কেউ এখানে আসত না, তখনও আমি লালগড়, নেতাইয়ে এসেছি৷ ১১-১২ বছর ধরে কী ভাবে এই এলাকা রক্তাক্ত হয়েছে সেটা দেখেছি৷ সেখানে আজ শান্তি ফিরে এসেছে৷ কেউ এই শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে সবার আগে মানুষই রুখে দাঁড়াবে৷’’  

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে সব কিছু দেওয়া হয়েছে৷ কোনও কিছু বাকি নেই৷ শুধু এখানে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে৷ এত দেওয়ার পরও কিছু লোক বলছে কিছু হয়নি, আমরা করে দেব৷ তাই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ নির্দেশ, উৎসব অনুষ্ঠান পালা করে আসতেই থাকবে৷ এর জন্য টেন্ডার ফেলা রাখা যাবে না৷ আগে পঞ্চায়েত সমিটি কোনও টাকা দেওয়া হত না৷ এখন তাঁরা টাকা পাচ্ছে৷ ফলে হাতে যে কাজ পড়ে আছে তা অবিলম্বে শেষ করতে হবে৷ জঙ্গলমহলে শান্তি বাজায় রাখতে হবে৷ 

আরও পড়ুন- হাওয়ায় ছড়াচ্ছে করোনা, সতর্কতা মুখ্যমন্ত্রীর! মাস্ক নিয়ে কড়া নির্দেশ

তাঁর কথায়, ঝাড়গ্রামে রাস্তা, সেতু থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল, স্টেডিয়াম, স্পোর্টস অ্যাকাডেমি, কিষাণ মান্ডি সব কিছু তৈরি করা হয়েছে৷ আজ সংযোগকারী রাস্তার জন্যও ৭৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হল৷ এখানে কি হয়নি বলুন তো? প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর কথায় কোনও কাজই আর বাকি নেই৷ পর্যটনের জন্য এখানে টুরিজম কটেজও তৈরি করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে ঝাড়খণ্ডের রাস্তা গর্তে ভরা ছিল৷ আজ তা আর চেনা যায় না৷ 

এছাড়াও মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফেরানো হয়েছে৷ কয়েক হাজার ছেলেমেয়েকে পুলিশে চাকরি দেওয়া হয়েছে৷ পাঁচ বছর যাঁরা সার্ভিস করছেন তাঁদের জুনিয়র কনস্টেবল থেকে কনস্টেবল করে দেওয়া হচ্ছে৷ ১ লক্ষ ২০ হাজার সিভিক পুলিশ নেওয়া হয়েছে৷ 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে অনেক উন্নয়ন হয়েছে৷ বিনা পয়সায় রেশন, চিকিৎসা, তফশিলি ও আদিবাসী ভাইবোনেদের জন্য শিক্ষাশ্রী, জেনারেলদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ বৃত্তি, সংখ্যালঘুদের জন্য ঐক্যশ্রী, ষাটোর্ধদের জন্য পেনশন, পুরোহিত-ইমামদের জন্য ভাতা, সব কিছু দেওয়া হচ্ছে৷ বার্ধক্য ও কৃষি ভাতা বাড়িয়ে হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে৷ কোনও কিছুই বাদ রাখা হয়নি৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 6 =