কলকাতা: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোয় ‘টুম্পা সোনা’ নাচকে কেন্দ্র করে তুমুল বিতর্ক৷ টুম্পা সোনা গানের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের কোমর দুলিয়ে উদ্দাম নাচের ছবি দেখে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন তাঁরা৷ মঙ্গলবার বন্ধ কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে অনুমতি ছাড়াই চলল এই নাচগান৷ কী ভাবে এটা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই ঘটনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য বিরোধী বলে উল্লেখ করে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে৷
আরও পড়ুন- ‘‘চুরি করা চাল দিয়েই হচ্ছে ‘মা’ প্রকল্প”! ফের বিস্ফোরক শুভেন্দু
এমন চটুল গানে পড়ুয়াদের উদ্দাম নৃত্য কোন সংস্কৃতি? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ শুধু তাই নয়৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আয়োজিত সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেল সাজানো হয়েছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগানে৷ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডলের দাবি, ‘খেলা হবে’ স্লোগান আসলে সংস্কৃতির সঙ্গে অপসংস্কৃতির লড়াইয়ের বার্তা৷
করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়৷ তবে ফি বছরের মতো এবছরও কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে আশুতোষ ভবনের সামনে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ৷ আর সেই উপলক্ষেই গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ভিড় জমান পড়ুয়ারা৷ সেখানেই চিড় ধরল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ঐতিহ্যে৷ সেই সঙ্গে দেবী বন্দনাতে লাগল রাজনীতির রং৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি তো বটেই, মণ্ডপে দেখা গেল ‘খেলা হবে’-র মতো বহু চর্চিত ও বিতর্কিত স্লোগান৷
আরও পড়ুন- কমেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা, কিন্তু নিয়োগ? উঠছে প্রশ্ন
এছাড়াও এদিন কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি৷ কারও মুখে ছিল না মাস্ক৷ শিকেয় উঠেছিল দূরত্ব বিধি৷ যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল৷ তাঁর কথায়, “সকলে স্বাস্থ্যলবিধি মেনে চলছে৷ সবার মুখে মাস্ক রয়েছে৷ কিন্তু টিভির পর্দায় মুখ দেখানোর জন্য মাস্ক খুলে ফেলেছে। তাতে কোনও অসুবিধা নেই।” কিন্তু সরস্বতী পুজোয় ‘খেলা হবে’ স্লোগান কেন? এর জবাবে তিনি বলেন, “আসলে এই খেলা হবে স্লোগানটি বাংলার সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্য৷ যদি খেলতে হয়, বাঙালিরা তা খেলবে। বাঙালি বলতে শুধু বাংলাভাষী নয়, বাংলায় বসবাসকারী সব বাঙালির সঙ্গে অবাঙালি বহিরাগতদের লড়াই হবে। এই লড়াই অপসংস্কৃতির সঙ্গে সংস্কৃতির৷ এই লড়াই অসভ্যতার সঙ্গে সভযসঙতার৷”