কমেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা, কিন্তু নিয়োগ? উঠছে প্রশ্ন

কমেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা, কিন্তু নিয়োগ? উঠছে প্রশ্ন

কলকাতা: স্কুল ছুট রুখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে  সরকার৷ পড়ুয়াদের জন্য একাধিক প্রকল্প আনা হয়েছে৷ সবুজ সাথী প্রকল্পে দেওয়া হচ্ছে সাইকেল, কন্যাশ্রী প্রকল্পে মিলছে নগদ অর্থ৷ দেওয়া হচ্ছে মিড ডে মিল৷ কিন্তু এত সবের পরেও কি কমেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা? গত দশ বছরে তৃণমূল শাসনে শিক্ষা জগতের প্রাপ্তি কতটা? কতটাই বা অপ্রাপ্তি? ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে উঠছে সেই প্রশ্ন৷  

আরও পড়ুন-  স্কুল বন্ধ থাকায় কতটা প্রভাব ফেলেছে আপনার শিশুর মনস্তত্ত্বে? বলছে সমীক্ষা

শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই শাসক দলের তরফে দেওয়া হয় গত দশ বছরে গড়ে ওঠা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের খতিয়ান৷ এই সংখ্যাটা নেহাত কম নয়৷ কম নয় ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধিও৷ তৃণমূল জমানায় স্কুল ছুটের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে বলে দাবি৷ ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন-এর (ইউডাইস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালের তুলনায় স্কুল ড্রপআউটের সংখ্যা এখন অনেকটাই কম৷ সে কথা বাজেট প্রস্তাবেও জানানো হয়েছে৷  

কিন্তু কী ভাবে কমল স্কুল ছুটের হার? রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদারের কথায়, মিড ডে মিল, স্কুল পড়ুয়াদের বই, জামা-জুতো, সাইকেল দেওয়া হচ্ছে৷ আর এই সকল প্রল্পের জন্য বাবা-মায়েরাও তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে৷ গত সেপ্টেম্বর মাসের নিরিখে স্কুল ছুট কমানোর দিক থেকে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷ পড়ুয়াদের কাছে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়ার দিক থেকেও পয়লা নম্বরে রয়েছে বাংলা৷ 

স্কুল ছুটের সংখ্যা কমেছে ঠিকই কিন্তু শিক্ষার মান? ২০১৮ সালের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে গ্রামীন পড়ুয়াদের কুশলতা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়৷ স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল শিক্ষক নিয়োগ৷ মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৮৭ হাজার শিক্ষক পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য৷ যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে স্কুল শিক্ষার উপর৷ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে ঘটতি রয়েছে৷ 

আরও পড়ুন- সাড়ে ১৬,০০০! ভোটের মুখে প্রাথমিক শিক্ষকদের মেধা তালিকা প্রকাশিত

বিভিন্ন স্তরে নিয়োগের জন্য লাগাতার আন্দোলন বিক্ষোভ চালাচ্ছেন হবু শিক্ষকরা৷ তিন বছর আগে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ স্তরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল৷ সেই পরীক্ষার ফলও প্রকাশিত৷ কিন্তু এখনও নিয়োগ পাননি প্রার্থীরা৷ সরকার বদলালেও শিক্ষাক্ষেত্রে সরকার তথা দলীয় হস্তক্ষেপ এবং অনিয়মের অভিযোগ কমেনি৷ বরং তা রয়েছে ভুরি ভুরি৷ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্রের অভিযোগ,  নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপোষণের ঘটনা অত্যন্ত বেশি। এর পাশাপাশি স্কুলগুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে রয়েছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।

তৃণমূল জমানার শুরুর লগ্নে বারে বারে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা উঠে এসেছে৷ কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রেও দুর্নীতির অভিযোগ বেড়েছে৷ যা নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি রাজ্য সরকার৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =