কলকাতা: রাজনীতির আঙিনায় ক্রমেই যেন ‘রহস্যময়’ হয়ে উঠছেন বাবুল সুপ্রিয়৷ মন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকেই বেসুরো তিনি৷ রাজনীতিবিদ হিসাবে নয়, বরং নিজের গায়ক সত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতেই বেশি উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন তিনি৷ এমনকী দিন কয়ের আগে মুকুল রায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ফলো করে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন আসানসোলের সাংসদ৷ যদিও তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সখ্য নিয়ে ওঠা গুজবের শ্রীবৃদ্ধি বিশেষ ঘটেনি৷ তবে ফেসবুকে বারবার যেন ফুটে উঠছে বাবুলের হতাশা৷ অনেকেই বলছেন মন্ত্রিত্ব হারিয়ে তিনি রাজনৈতিক সন্ন্যাস চাইছেন৷ এই সব জল্পনার মাঝেই ফেসবুক পোস্টে বাবুল লিখলেন, ‘‘সবাইকে খুশি করার রাজনীতি তো করিনি৷ পসিবেল নয়৷ চেষ্টাও করিনি৷ কিছু মানুষ নিশ্চয়ই আছেন যাঁদের সঙ্গে হয়তো ভালো ব্যবহার করতে পারিনি, ভালো হতে পারিনি বা বকাবকি করেছি, রাগ চেঁচামিচি করেছি।’’
আরও পড়ুন- PAC-র ‘ব্যতিক্রমী’ প্রথম বৈঠকেই অনুপস্থিত মুকুল রায়, নেই বিজেপি বিধায়করাও
বাবুলের এই পোস্টকে কেন্দ্র করে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে। গতকাল বাবুল তাঁর পোস্টে আরও লিখেছিলেন, ‘‘অনেকেই বলছেন রাজনীতি ছেড়ে দিতে!! কথা গুলো গভীরভাবে ভাবাচ্ছে আমাকে৷ রাজনীতিতে কিছু পাওয়ার আশায় বা ‘পাওয়ার’-এর আশায় তো আসিনি।’’ উল্লেখ্য, ফেসবুকে বোমা ফাটিয়ে পোস্টের শেষের দিকে বাবুল আরও লেখেন, ‘আমি আর যাই হই না কেন, opportunist, disloyal বা back-stabber নই৷ নিজের নিজের মতো করে এটাও বুঝে নিন – আর কিছু বলছি না।’’ কেন এই ধরনের কথা বলছেন বাবুল? কাকে উদ্দেশ্য করেই বা এই পোস্ট? তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি৷ তবে মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ার পর থেকেই তিনি যে হতাশ, তা স্পষ্ট৷ দিলীপ ঘোষের সঙ্গেও তাঁর সংঘাত প্রকাশ্যে৷
আরও পড়ুন- ‘প্যাক’ সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন রাজ্যের
উল্লেখ্য বিষয় হল, আজকাল আর চেনা মেজাজে দেখা যাচ্ছে না বাবুল সুপ্রিয়কে৷ যিনি নিয়মিত ভাবে তৃণমূলের বিরোধিতা করে আসছিলেন, তিনি এখন নীরব৷ বরং তুলে ধরছেন তাঁর মনের কথা৷ বলছেন মানুষের কথা৷ বাবুল তাঁর পোস্টে তাই লিখেছেন, ‘‘আপনারাই আমাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছেন৷ আপনাদের ভালোবাসাকে পাথেয় করেই রাজনীতির ‘কিস্যু’ না জানা বাবুল রাজনীতিতে এসেছিলো – আপনারাই জিতিয়েছেন, অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আপনারা যা লিখছেন তার মর্মার্থ আমার মনে প্রাণে প্রশ্ন জাগাচ্ছে! আপনাদের ভালোবাসাকে পাথেয় করে আপনাদেরই মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে কোথাও আপনাদের থেকে, ‘আমার আমি’ থেকে দূরে চলে যাচ্ছি না তো? তা না হলে বার বার আপনারা ফিরে আসতে বলছেন কেন??’’