নিজেকে কী ভাবেন অনুব্রত? ‘ঔদ্ধত্য’ নিয়ে সভাপতির একহাত নিলেন সিদ্দিকুল্লা

নিজেকে কী ভাবেন অনুব্রত? ‘ঔদ্ধত্য’ নিয়ে সভাপতির একহাত নিলেন সিদ্দিকুল্লা

কৌশিক সালুই, বোলপুর: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন৷ ভোট ময়দানে মাটি আঁকড়ে ধরতে কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছেন রাজনীতির কারবারিরা৷ এরই মধ্যে প্রকাশ্যে উঠে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব৷ আগাম বিধানসভার প্রার্থী ঘোষণা,  বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট হতে না দেওয়া এবং মঙ্গলকোট আউসগ্রাম কেতুগ্রাম বিধানসভার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন রাজ্যের গ্রন্থাগার ও জন শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। 

আরও পড়ুন- দলের ক্ষতি করছে ‘আইপ্যাক’! ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূল বিধায়ক খুললেন দলীয় পতাকা

শুক্রবার বীরভূমের যাত্রা মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে ছিল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জেলা প্রতিনিধিদের সম্মেলন৷ সেখান থেকেই আক্রমণ শানান দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে৷ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন,” পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলাম রাজ্যজুড়ে যে সুবিশাল কাজ হয়েছে, সেই উন্নয়নের নিরিখেই রাজ্যে ভোট হবে। এখানে চড়াম চড়াম আর মশারী টাঙানোর কোনও প্রয়োজন নেই। অথচ এখন দেখছি প্রার্থী ঘোষণা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি আছেন। সবাই ভালো কাজ করছেন। সময় হলে তাঁরাই করবেন। দলের মধ্যে একটা অন্তর্দ্বন্দ্ব ও গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা করছেন তিনি। এটা খুবই নিন্দনীয়৷ বীরভূমের ওই নেতা পথ দেখিয়েছিলেন কিভাবে নির্বাচন করতে হয় এবং কিভাবে জিততে হয়। তবে তাঁর আস্ফলন খুব মারাত্মক। দলের নেত্রী ঠিক করবেন কে প্রার্থী হবেন, কে হবেন না। উনি কে এই সমস্ত বলার।’’ সুদ্দিকুল্লা আরও বলেন, ‘‘বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট, আউসগ্রাম ও কেতুগ্রাম বীরভূমের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে এই তিনটি জায়গা ক্যান্সারের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি জটিল করেছেন ওই নেতা। আমি এর প্রতিবাদ করছি। এতে দলের লাভ হবে না৷’’ 

আরও পড়ুন- পুজোয় এবার তুমুল বৃষ্টির পূর্বাভাস! ষষ্ঠী থেকে দশমী, বাধ সাধছে বর্ষা

মন্ত্রী আশিষ বন্দোপাধ্যায়কে কর্মীসভার মঞ্চ থেকে অপদার্থ বলে তিরষ্কার করেছিলেন অনুব্রত৷ এই প্রসঙ্গটিও এদিন তুলে ধরেন সিদ্দিকুল্লা৷ তিনি বলেন,” ওঁনাকে এইসব কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে? তিনি নিজেকে কি ভাবেন? জমানা বদলাচ্ছে। মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসছে। জনগণ প্রশ্ন করলে, জবাব দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বলেছিলাম বীরভূম পথ দেখিয়েছে সর্বনাশের। আগাম প্রার্থী ঘোষণা করে আরও একবার সেই পথ দেখানো হচ্ছে। এতে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হবে। দলকে শক্ত হতে হবে। ভাববেন না সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী কেউ নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা আছে। কেউ যদি দল বিক্রি করে খেতে চান, আর যা খুশি তাই করব ভাবেন, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দলের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী৷ আমি বড় নেতা নই। এই আস্ফালনের জবাব মানুষ দেবে। তাই দলকে বলব শক্ত হাতে লাগাম ধরুক। চাবুক মারুক পিঠে। কারণ দলই বড়, ব্যক্তি নয়।’’ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four − one =