কলকাতা: বাংলার কিছু মানুষ তাঁকে মনে করেন পাগল, আবার কিছু মানুষ ভাবেন তিনি আঁতেল। কেউ তাঁকে সমর্থন করেন, কেউ বিরোধিতা। কিন্তু একটা জিনিস সবসময় থাকে, তা হল রোদ্দুর রায়কে ঘিরে বিতর্ক। ফেসবুক, ইউটিউবে ভিডিও শেয়ার করেন তিনি। বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন কিন্তু আর পাঁচ জনের মতো করে নয়। তাঁর ভাষা সংযত নয়, গালিগালাজ, কুমন্তব্যে ভরা। সেই নিয়েই বিতর্ক।
আরও পড়ুন- ‘মরে গেলেও বাংলা ভাগ করতে দেব না’, উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার মমতার
রোদ্দুরের অশালীন মন্তব্যের নিশানা থেকে বাদ যাননি স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও। সেই থেকেই বাঙালির রাগ তাঁর ওপর। তবে সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কটূ কথা বলে তিনি গোয়া থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু আদতে এই রোদ্দুর রায় কে? কী তাঁর পড়াশুনা, কী তাঁর চাকরি? আসুন জেনে নিই।
আরও পড়ুন- উত্তরে ঢুকেছে মৌসুমী বায়ু, দক্ষিণে ভ্যাপসা গরম, নিস্তার মিলবে কবে?
সবার আগে জেনে রাখা ভালো, এটি তাঁর আসল নাম নয়। আসলে রোদ্দুর রায়ের নাম অনির্বাণ রায়। বর্তমানে দিল্লির বাসিন্দা হলেও তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের ছেলে। রামনগর কলেজ থেকেই স্নাতক হন তিনি। পরে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার সুবাদে দিল্লিতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ পান। কাজ করতে করতেই তিনি গবেষণা নিয়েও ব্যস্ত। তাঁর বিষয় চেতনা বিজ্ঞান।
পাশাপাশি তিনি লিখে ফেলেছেন কয়েকটি বইও। এর মধ্যে অন্যতম ‘অ্যান্ড স্টেলা টার্নস আ মম’, মনোবিজ্ঞানের এই বই নিয়েও চর্চা কম নয়। একই সঙ্গে তিনি নিজেকে ‘মোক্সাবাদ’-এর জনক হিসেবে দাবি করেন। রোদ্দূরের মতে মোক্সা স্বাধীনতা, প্রেম এবং শান্তির অনুশীলন। তাঁর বাংলায় একটি উপন্যাসও আছে, নাম ‘মোক্সা রেনেসাঁ’।
আরও পড়ুন- কেক প্রস্তুতকারী সংস্থার পর নামী রেস্তরাঁ! রূপঙ্করের গান বয়কট করল কর্তৃপক্ষ
রোদ্দুর আদতে সবথেকে বেশি ‘জনপ্রিয়তা’ বা বলা যায় কটুক্তি অর্জন করেন রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুল ইসলামের গানের প্যারোডি গেয়ে। রবীন্দ্র সঙ্গীত ‘চাঁদ উঠেছিল গগণে’ গানের প্যারোডি রীতিমতো বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। কারণ ছিল, কবিগুরুর গানের ভাষা বদলে খিস্তি করেছিলেন রোদ্দুর।
আরও পড়ুন- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ, রাজ্যের হলফনামা তলব করল হাই কোর্ট
২০২০ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে তাঁর এই গানই জোর গলায় গাওয়া হয়েছিল যা আরও বেশি কুৎসিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। তবে তখনও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু এখন হল। সেই নিয়েও অবশ্য বিতর্ক কম নেই।