কলকাতা: রাতের অন্ধকারে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ওপর পুলিশি হস্তক্ষেপকে ধিক্কার জানাল ‘স্বরাজ ইন্ডিয়া’ও। এই নিয়ে নিজেদের তরফ থেকে একটি বিবৃতিও দিয়েছে তারা। বলা হয়েছে, টেট পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে যে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে, সেই আন্দোলনকে ক্রমাগতভাবে অবজ্ঞা করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আন্দোলনকারীদের অনশন, অবস্থান, ধর্না ইত্যাদি নানা কর্মসূচি এবং আন্দোলনকারীদের দাবির ব্যাপারে আদালত সহমর্মিতা দেখানোর পরেও ভুয়ো চাকুরীজীবীদের প্রতি রাজ্য সরকারের নরম মনোভাব রাজ্যবাসীকে স্তম্ভিত করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘তাঁর নাটক ধরা পড়ে গেছে’, মমতাকে তুলোধনা করলেন অগ্নিমিত্রা
বৃহস্পতিবার করুণাময়ীতে টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে ১৪৪ ধারা জারি করে যেভাবে রাতের অন্ধকারে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুলিশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বন্ধ করা হল, যেভাবে চাকরিপ্রার্থীদের প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হল, তার তীব্র বিরোধিতা করছে স্বরাজ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ। যুব সমাজের প্রতি রাজ্য সরকারের এই মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করেছে তারা। একই সঙ্গে দাবি করেছে, চাকরিপ্রার্থীদের এই আন্দোলনকে মর্যাদা দিয়ে তাঁদের সব ন্যায্য দাবি দাওয়া মেনে নিতে হবে। ‘স্বরাজ ইন্ডিয়া’-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভীক সাহার বক্তব্য, “পরীক্ষায় সফল হওয়া শিক্ষকদের সরকারি চাকরিতে ন্যায্য নিয়োগের প্রশ্নে যে আন্দোলন চলছে, তার প্রতি পূর্ণ সংহতি রয়েছে আমাদের। আন্দোলনকারীদের প্রতি রাজ্য সরকারের ক্রুর আচরণ তাদের অসংবেদনশীল, অগণতান্ত্রিক এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিফলন। আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে রাজ্য সরকারকে।”
তিনি আরও বলেন, আদালত বেআইনি চাকুরিরতদের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছে, তা বাস্তবায়িত করতে হবে। দুর্নীতি-স্বজনপোষণ এবং অগণতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কিন্তু জনরোষ তৈরিতে সাহায্য করা হচ্ছে, এটা যেন শাসক দল, সরকার ও প্রশাসন মাথায় রাখে। জনরোষ তৈরি হলে রাজ্য সরকারের জন্য তা কিন্তু মারাত্মক পরিণতির কারণ হতে পারে। তাঁর আরও সংযোজন, রাজ্য সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের সুযোগ নিচ্ছে আম্বানি-আদানি-সহ ফ্যাসিস্ট আরএসএস-বিজেপি। তাদেরকে পশ্চিমবঙ্গে সুযোগ করে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার। এমনই দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কোন পথে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন? নজরে পরবর্তী রায়!
অন্যদিকে, স্বরাজ ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ সম্পাদক রাম বচ্চন বলেন, “চাকরির দাবিতে আন্দোলন একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। এই সরকার বলেছিল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হস্তক্ষেপ হবে না, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি একদিকে কেন্দ্র অন্যদিকে রাজ্য, উভয় সরকারই সমস্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ-সহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে দমন-পীড়ন নামিয়ে আনতে। আমরা এই আচরণকে ধিক্কার জানাই।”