সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কোন পথে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন? নজরে পরবর্তী রায়!

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কোন পথে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন? নজরে পরবর্তী রায়!

নিজস্ব প্রতিনিধি:  শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে নজিরবিহীন আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। দিনের পর দিন ধরে তাঁরা এই ইস্যুতে পথে রয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায় তাঁদের ভরসা জুগিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট যে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অপসারণের রায়েও স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে তাঁকে অবশ্য এখনই ওই পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

এর পাশাপাশি মানিককে সিবিআইয়ের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ বহাল রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। এছাড়া শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে ওই ২৬৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে কলকাতা হাইকোর্টের মামলায় অংশীদার করতে হবে। তাঁরা তাঁদের নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করে হাইকোর্টে হলফনামা দিতে পারবেন বলেও জানিয়েছে আদালত। তবে কি আদালতের এই রায়ে সমস্যায় পড়লেন চাকরির দাবিতে পথে থাকা আন্দোলনকারীরা? বিষয়টি নিয়ে আইন মহলের বক্তব্য, বিচার প্রক্রিয়া বিভিন্ন ধাপে এগিয়ে যায়। প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ কার্যত এটাই স্পষ্ট করেছে যে, নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের যোগাযোগ থাকতেই পারে। তাই ভবিষ্যতে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অন্য খাতে বইতেই পারে। আর বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের বিরোধীদের বক্তব্য, যাই হোক না কেন, নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় যুক্ত সমস্ত দোষীরা শাস্তি পাবেন। চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে হাইকোর্টে মামলা করা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ২৬৯ জন আপাতত কিছুটা স্বস্তি পেলেও চার সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে তাঁদের জানাতে হবে তাঁরা বৈধ উপায়েই চাকরি পেয়েছেন। সেটা বাস্তবে তাঁদের পক্ষে কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অন্যদিকে ওই ২৬৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

যদিও টেট মামলায় আন্দোলনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের উপরেই ভরসা রেখেছেন। তাঁরা মনে করছেন হয়ত কিছুটা দেরি হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুবিচার তাঁরাই পাবেন। বিষয় নিয়ে তাঁদের ব্যাখ্যা, সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু টেট মামলায় সিবিআই তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি। সেই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টেও দুর্নীতি প্রমাণিত হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নতুন করে রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় চার সপ্তাহ পর সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি নিয়ে ফের শুনানি হবে। তার মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে।  আপাতত সেদিকেই নজর থাকবে সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × two =