কলকাতা: হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঠাকুরনগরে মতুয়া মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ তার উদ্বোধন। সেই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভার্চুয়ালি সেই ভাষণের সাক্ষী থাকল মতুয়া সম্প্রদায় তো বটেই, গোটা বাংলা। আজ হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১১ তম আবির্ভাব তিথি, তাই আজ থেকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই মেলা। আগেই এই মেলা উপলক্ষ্যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার আজ ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখলেন তিনি।
আরও পড়ুন- তোলাবাজির কারণেই রামপুরহাট কাণ্ড, বিস্ফোরক দাবি বিজেপি সাংসদের
এদিন মোদী প্রথমেই ‘জয় হরিবোল’ ধ্বনি তোলেন। তারপর বাংলাতেই হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১১ তম আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে তিনি সকলকে শুভেচ্ছা ও নমস্কার জানান। শান্তনু ঠাকুর, মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুর সহ বাকি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের তিনি আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং মনে করান যে, গত বছর গুরুচাঁদ ঠাকুর ও মতুয়া সম্প্রদায়কে তিনি শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছিলেন। এটাকে তিনি সৌভাগ্য মনে করেন। তিনি বলেন, আজ প্রযুক্তির মাধ্যমে আবার ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তিনি নিজেকে আরও সমৃদ্ধ মনে করছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ঠাকুরবাড়ি সব সময় তাঁকে আপন ভাবে। তিনি এও জানান যে তিনি ওরাকান্দি গিয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান ভেবেছিলেন। শান্তনু ঠাকুরের প্রশংসাও করেন মোদী আজকে। বলেন, তাঁর কারণেই আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে মতুয়া সম্প্রদায়ের কাজ।
মতুয়া সম্প্রদায় নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে কম আলোচনা হয়নি। বিধানসভা ভোটের সময় এই সম্প্রদায়ে নিয়ে বিরাট টানাপোড়েন চলেছিল। কিন্তু তারপর থেকেই যেন পরিস্থিতির বদল ঘটে। ধীরে ধীরে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছিল। সম্প্রতি বিজেপি বিক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে একজন তিনি। তবে আজকের অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁর ডাকেই সাড়া দিয়েছেন নমো। মতুয়া অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ বিরাট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ফের মতুয়াদের মন পেতেই নমোর এই উদ্যোগ বলেও মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- আবারও বিস্ফোরণ বাংলার গ্রামে! কারণ কি মজুত বোমা
গত জানুয়ারি মাসে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। এক বা দুই নয়, শান্তনু ঠাকুর রাজ্য বিজেপির সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপই ছেড়ে দেন বলেই জানা যায়। রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। তাই আজকের এই ঘটনা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। প্রসঙ্গত, মতুয়া মহাসংঘের উদ্যোগে প্রতি বছরই মতুয়াদের বিরাট মেলা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমান হাজার হাজার মতুয়া। তবে এই বছর প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ এই মেলাকে আলাদা মাত্রা দিল।