চাষার ব্যাটা’ই আজ চিনের সর্বশক্তিমান! বাইশে বহু চড়াই-উতরাই দেখলেন জিনপিং

চাষার ব্যাটা’ই আজ চিনের সর্বশক্তিমান! বাইশে বহু চড়াই-উতরাই দেখলেন জিনপিং

বেজিং: ছিলেন চাষার ব্যাটা৷ এক সময় চাষ করতেন নিজেও৷ সেখান থেকেই দেশের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁকে নিয়ে বহু বিতর্ক হলেও কার্যত সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে চলতি বছর আরও একবার চিনের সর্বশক্তিমান নেতা নির্বাচিত হন৷ ২০২২-এর অক্টোবর মাসে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০ তম কংগ্রেস অধিবেশনে  তৃতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে ঘোষণা করা হয় শি জিনপিংয়ের নাম। জিনপিং-ই চিনে প্রথম নেতা যিনি তৃতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন। সেই সঙ্গে চিনের সর্বাধিনায়ক মাও জে দং-এর সমক্ষমতা সম্পন্নও হয়ে উঠলেন এই কৃষক সন্তান৷ তিনি তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পরই বদল আনা হয় চিনের সংবিধানে৷ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় জিনপিংয়ের ক্ষমতা। 

আরও পড়ুন-চাষার ব্যাটা’ই আজ চিনের সর্বশক্তিমান! বাইশে বহু চড়াই-উতরাই দেখলেন জিনপিং

বাবা ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির শক্তিশালী নেতা৷  সেই সূত্রে তিনিও ছিলেন দলের ঘনিষ্ঠ৷ কমিউনিস্ট পার্টিতে জায়গা করে নিতে বিশেষ কসরত করতে হয়নি জিনপিংকে। তবে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সর্বাধিনায়ক হয়ে উঠেছেন নিজের ক্যারিশ্মাতেই। প্রথমবার চিনের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরই পরিবর্তন এনেছিলেন সামরিক বাহিনীতে৷ বিরোধীদের তাড়িয়ে তৈরি করেন নিজের অনুগত বাহিনী। পলিটব্যুরোর যে সকল সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেন শি।

তবে চলতি বছর জিনপিংয়ের জনপ্রিয়তায় কিছুটা হলেও ভাঁটা পড়েছে। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে হয়েছে দেশের মানুষ। এবং এই বিরোধিতার নেপথ্যে রয়েছে চিনের জিরো কোভিড নীতি। করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রথম থেকেই দেশে কড়া পদক্ষেপ করেছে চিন৷ বিগত দুই বছর দফায় দফায় লকডাউন করা হয়েছে৷ আক্রান্তদের পাঠানো হয়েছে নিভৃতবাসে৷ সংক্রমণ দমনে জোর করে করোনা পরীক্ষা করানো, রোগীদের গৃহবন্দি করে রাখার মতো অভিযোগও ওঠেছে জিনপিং-এর বিরুদ্ধে। এমনকী শুধুমাত্র করোনা রোগী থাকার জন্য একটি আবাসনে আগুন লাগার পরেও কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

বেজিং, সাংহাই সহ চিনের বিভিন্ন শহরে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন চিনা জনগন। জিনপিংয়ের ইস্তফার দাবি তোলেন তাঁরা৷ চিনে যে ভাবে জনগণের কণ্ঠ রোধ করা হয়, তার প্রতিবাদে দেখানো হয় সাদা কাগজ৷ এরপরই কিছুটা হলেও পিছু হটতে বাধ্য হয় জিনপিং সরকার। চাপে পড়ে শিথিল করা হয় জিরো কোভিড নীতি। তবে যে ভাবে শি-র ইস্তফার দাবিতেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে কিছুটা হলেও চাপ বেড়েছে জিনপিং-এর উপর। প্রশ্নের মুখে পড়েছে চিনের একনায়কতন্ত্র৷