লন্ডন: শুধু ফুসফুস নয়, করোনা আঘাত হানতে পারে মানুষের মস্তিষ্কের উপরেও৷ কোভিডকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপর তা প্রভাব ফেলতে পারে৷ করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে খারাপ দিক হল মাস্তিষ্কের এই অবক্ষয়৷ এর ফলে একজন প্রাপ্ত বয়োস্কের মস্তিষ্ক ১০ বছরের শিশুর মতোও হয়ে যেতে পারে৷ এমনটাই জানালেন গবেষকরা৷
আরও পড়ুন- মানুষের কাজ ছিনিয়ে নিচ্ছে রোবট! ভবিষ্যতের চাকরি প্রার্থীদের মাথায় হাত
ইমপেরিয়াল কলেজ অফ লন্ডনের চিকিৎসক অ্যাডম হ্যাম্পশায়ার সম্প্রতি একটি সমীক্ষ চালান৷ তাতে দেখা গিয়েছে, কিছু গুরুতর করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির কয়েক মাসের জন্য কগনিটিভ ডেফিসিটস দেখা দিয়েছে৷ গবেষকরা জানাচ্ছেন, দেখা গিয়েছে কোভিড আক্রান্ত রোগীর দীর্ঘস্থায়ী মস্তিষ্কের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ যাঁরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, যাঁদের কোনও লক্ষ্যণ নেই তাঁদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ কগনিটিভ পরীক্ষা করে দেখা হয় মস্তিষ্ক কতখানি কাজ করছে৷ যেমন শব্দ বা কোনও পাজলে জয়েনিং ডট একজন ব্যক্তি কতখানি মনে রাখতে পারছে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়৷ আলজাইমারের মতো রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা ব্যাপকভাবে করা হয়ে থাকে৷ গবেষকরা বলছেন, দেখা গিয়েছে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মস্তিষ্ক ১০ বছরের শিশুর মতও হয়ে যেতে পারে৷
আরও পড়ুন- সিরিয়ায় এয়ারস্ট্রাইক, বিমান হামলায় খতম ৭ আলকায়দা নেতা, দাবি আমেরিকার
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাতেও উঠে এসেছিল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজ্ঞানীদের দাবি, মস্তিষ্কে দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে করোনা। ভাইরাসের কণাগুলি মস্তিষ্কের কোষকে দ্রুত ঘিরে ফেলছে। যার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্কে করোনা সংক্রমণের এই ধরনকে বিজ্ঞানীরা জিকা ভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কারণ, জিকা ভাইরাসও ঠির অই ভাবেই মস্তিষ্কের উপর হামলা চালায়। পরীক্ষাগারে ইঁদুরের মস্তিষ্কে করোনা সংক্রমণ ঘটিয়ে এই পরীক্ষা করার পরই তথ্যগুলি সামনে এসেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোষ বিভাজন ঘটিয়ে মস্তিষ্কে দ্রুত ‘ভাইরাল লোড’ বাড়িয়ে তুলছে করোনাভাইরাস। ফলে মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ হচ্ছে না৷ অক্সিজেনের না পৌঁছনোর দরুন ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ছে মস্তিষ্কের কোষগুলি৷ এবং পরে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।