কাবুল: তালিবানি শাসন কী হতে পারে তার আন্দাজ গোটা বিশ্বের রয়েছে। ২০ বছর আগের তালেবানের সঙ্গে আজকের তালিবানের ফারাক রয়েছে বলে সংগঠন দাবি করেছে কিন্তু তবুও তাদের বিশ্বাস কেউ করে না। কারণ মহিলাদের কতটা ঘৃণা করে তালিবানরা তার প্রমাণ আগেও মিলেছিল আর এখন আফগানিস্তান দখল করার পর যে ফতোয়া তারা জারি করেছে সেটা দেখেও সেই ইঙ্গিত মিলছে। যে সমস্ত বিধি নিষেধের কথা তালিবানরা বলেছে তা দেখে শিহরিত হবেন না গোটা বিশ্বে এমন কোন মহিলা বা মানুষ নেই।
আরও পড়ুন- প্রাণ বাঁচাতে এক কাপড়ে দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা, কাবুলে পদপৃষ্ঠ অসহায় জনতা
শিক্ষিত মহিলাদের সবথেকে বেশি ঘৃণা করে তালিবানরা সেই কারণে আগেও তারা নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছিল এবং এখনও আফগানিস্তান দখল নিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ মেয়েদের স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে দিয়েছে তারা। এমনকি যেসব মহিলারা কাজ করেন তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে যে বিয়ের বাজারে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের নাম নিলামে তুলছে তালিবানরা। সব মিলিয়ে মহিলাদের জন্য কেমন দিন আসছে তা আলাদা করে বুঝিয়ে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যেই একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালিবানরা। স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, রক্তের সম্পর্ক রয়েছে এমন পরিবারের সদস্যের সঙ্গেই একমাত্র রাস্তায় বেরোতে পারবেন আফগানি মহিলারা। এছাড়া শুধুমাত্র স্বামীর সঙ্গে রাস্তায় বেরোনো যাবে, আর কোন ভাবে তারা রাস্তায় বেরতে পারবেন না। একইসঙ্গে রাস্তায় বেরোলে বোরখা এবং হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে মহিলাদের পায়ের শব্দ যাতে অন্য পুরুষের কানে না যায় সেই জন্য হিল জুতো পরা যাবে না, মহিলাদের গলার আওয়াজ যাতে অন্য পুরুষের কানে না যায় সেজন্য উঁচু গলায় কথা বলা যাবে না! এর পাশাপাশি রয়েছে, ক্যামেরার সামনে না আসার নির্দেশ।
একই সঙ্গে রাস্তা থেকে অচেনা পুরুষ যাতে তাদের দেখতে না পান সে জন্য বাড়ির জানালা রং করে বা অন্য কোন উপায়ে ঢেকে রাখতে হবে। বাড়ির মহিলারা ব্যালকনিতে আসতে পারবেন না, চাকরি করতে পারবেন না, পড়াশোনা করতে পারবেন না। কোন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে জমায়েত করতে পারবেন না, আবার মহিলাদের নামে নামাঙ্কিত সমস্ত জায়গার নাম পরিবর্তন করা হবে। আফগানিস্তান তালিবানদের দখলে চলে যাওয়ায় ইতিমধ্যে কাবুলের রাস্তাঘাট নারী শূন্য হয়ে গিয়েছে। বহু মানুষ ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন কিন্তু তাদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কম কারণ তারা সেই সুযোগই পাননি। তাই আগামী দিনে সেই সব নারীদের কী অবস্থা হতে চলেছে যারা এখনো পর্যন্ত আফগানিস্তানে রয়ে গিয়েছেন, তাদের কথা ভেবে শিহরিত হচ্ছে গোটা বিশ্ব।