নিউইয়র্ক: নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। সেই বিবাদকে কেন্দ্র করেই গত ২৭ সেপ্টেম্বর আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে ফের যুদ্ধ বাধে। বাড়তে থাকে উত্তেজনা৷ দুই দেশকে রাষ্ট্রসংঘ শান্তি আলোচনায় বসার আবেদন জানালেও, তারা তা প্রত্যাখান করে। ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ এবং আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী জোহরাব মানাতসাকান্যন বিতর্কিত অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করলেন৷
আরও পড়ুন- ভারতকে কোনঠাসা করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পাকা করছে চিন, মদত BRI প্রকল্পে
এদিন টেলিফোনের মাধ্যমেই নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আলোচলা হয় তাঁদের মধ্যে৷ দুই দেশের সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন লাভরভ৷ দ্রুত যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি৷ এক বিবৃতিতে রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই) মিনস্ক গ্রুপের তত্ত্বাবধানে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরে নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে শান্তি ফেরাতে সহায়তা করার জন্য মস্কো প্রস্তুত৷ এর আগে ওএসসিই মিনস্ক গ্রুপ (রাশিয়া, ফ্রান্স ও আমেরিকা) একটি বিবৃতিতে নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে ক্রমাগত হিংসার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছিল৷ সাধারণ মানুষকে যে ভাবে নিশানা করা হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা৷ সাধারণ মানুষের উপর হামলা কোনও পরিস্থিতিতেই গ্রহণীয় নয় বলেও জানানো হয়৷
এই যুদ্ধের জেরে তুরস্কর সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে৷ আর্মেনিয়ার অভিযোগ, তুর্কি বিমান হামলায় তাদের একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এরপর আজারবাইজানও দাবি করে যে তারা আর্মেনিয়ার দুই হাজার তিনশ সেনাকে নিষ্ক্রিয় করেছে। এছাড়া প্রতিপক্ষের বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংসেরও দাবি করেছে তারা৷
আরও পড়ুন- ভোটের আগেই গৃহবন্দি ট্রাম্প! সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট
নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে প্রাক্তন দুই সোভিয়েত রাজ্যের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের৷ ১৯৯১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হওয়ার পর এই এলাকা নিয়ে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে এই নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। তবে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল ৩০ হাজার মানুষের৷ পরে ২০১৬ এবং এই বছরের শুরুতে ফের শুরু হয় সংঘাত৷ গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ফের চরম আকার নিতে থাকে সংঘর্ষ৷ আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার উদ্দেশে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া ও আমেরিকা৷ তবে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সাফ বক্তব্য, আলোচনার কোনও সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পশিনিয়ান বলেন, লড়াইয়ের সময় কোনও আলোচনা হতে পারে না।