স্ত্রীকে দেখেননি ২ বছর, প্রেমের টানে সাত সমুদ্দুর পাড় স্বামীর! হার মানাল চিত্রনাট্যকেও

স্ত্রীকে দেখেননি ২ বছর, প্রেমের টানে সাত সমুদ্দুর পাড় স্বামীর! হার মানাল চিত্রনাট্যকেও

মুম্বই:  ‘প্রেম মানে না কোনও বাধা’৷ ভালোবাসার টানে পাড় করা যায় সাত সমুদ্দুর৷ ভেঙে ফেলা যায় সব প্রতিবন্ধকতা৷ এসব শুনে অনেকেরই  মনে হতে পারে এ সব তো গল্প কথা৷ কিন্তু তেমনটা একেবারেই নয়৷ স্ত্রীর কাছে পৌঁছতে এই যুবক যা করলেন, তা যে কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়৷ 

আরও পড়ুন- পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করার হুমকি দিয়েও কূটনৈতিক চাপে ঢোক গিলল আমেরিকা

বছর সাঁইত্রিশের হুয়াংয়ের বাড়ি ভিয়েতনামে। তাঁর স্ত্রী ভারতে কর্মরত৷ মুম্বইয়ের একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। মহামারীর জেরে টানা দু’বছর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি তাঁর৷ তাই ভিয়েতনাম থেকে তিনি চলে আসেন থাইল্যান্ডে। মহাসমুদ্রে ভাসিয়ে দেন প্রেমের তরী৷  কখনও প্যাডেল করে, কখনও আবার বৈঠা টেনে এগোতে থাকেন তিনি৷ এই ভাবে ১৮টি রাত কাটে জলের বুকে৷ সইতে হয় সাগরের ঝড়ঝঞ্ঝা৷ লক্ষ্য মুম্বই বন্দর৷ থাইল্যান্ডের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৮০ কিমি দূরে চলেও এসেছিলেন তিনি৷ তারপর….

বছর ৩৭-এর হো হুয়াং হাঙ আর তাঁর স্ত্রী আনা হারোদেৎস্কার প্রেম কাহিনীতে এখন মশগুল নেটপাড়া৷ স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সুদুর থাইল্যান্ড থেকে ২ হাজার কিলোমিটার জলপথ পেড়িয়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন হো৷ সঙ্গী একটি প্যাডেল বোট৷  কিন্তু ভাগ্য তার জন্য অন্য কিছু ভেবে রেখেছিল৷ যাত্রা পথে জল ও খাদ্যের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এমনকী তাঁর বোটের নেভিগেশন সিস্টেমও সঠিকভাবে কাজ করছিল না৷ দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল একটি মাত্র স্যুটকেস৷ খাবার জল প্রায় শেষ হতে বসেছিল৷ খাবার বলতে ছিল মাত্র ১০ প্যাকেট নুডলস৷ সৌভাগ্যবশত সিমিলান দ্বীপের কাছে সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের একটি ট্রলার তাঁর নৌকাটি দেখতে পায়৷ এই এলাকাটি থাই মেইনল্যান্ড থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে৷ ওই মৎস্যজীবীরা তড়িঘড়ি নৌসেনা বাহিনীকে খবর দেয়৷ তাঁরা এসে হুংকে উদ্ধার করে।

 
হো হুয়াং উপকূলরক্ষী বাহিনীকে জানান, দুই বছর স্ত্রীকে চোখে দেখেননি৷ ভারতের ভিসা পাওয়ার জন্য বহু আবেদন করেও কাজ হয়নি। গত ২ মার্চ ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে এসে নামেন৷ ভেবেছিলেন সেখান থেকে ভারতগামী বিমানে উঠবেন৷ কিন্তু ভারতে যাওয়ার ভিসা তিনি পাননি।  তাই বাধ্য হয়েই একটা বোট কিনে সমুদ্র পথে পাড়ি দেন। আপাতত দুই দূতাবাসের কাছেই চিঠি পাঠিয়েছে থাই সরকার। উত্তর এলেই স্ত্রীর দেখা পাবেন হুয়াং।