সেনা শাসনের পথে পাকিস্তানে? সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে ইমরানের ভাগ্য

সেনা শাসনের পথে পাকিস্তানে? সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে ইমরানের ভাগ্য

ইসলামাবাদ:  টালমাটাল পরিস্থিতিতে পাকিস্তান৷ ইমরান খানের ইস্তফার দাবিতে বিরোধীদের অনাস্থ প্রস্তাব ঘিরে চড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ৷ কিন্তু রবিবার একেবারে শেষ বলে ম্যার ঘোরান ইমরান খান৷ পাক ন্যাশানাল অ্যাসেম্বলিতে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন তিনি পৌঁছে যান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে। তাঁর কাছে গিয়ে সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করার আর্জি জানান। সেই মতো অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন আরিফ। অন্যদিকে, অ্যাসেম্বলিতে পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। তিনি এই অনাস্থা প্রস্তাবকে সংবিধান বহির্ভূত বলে উল্লেখ করেছেন৷ কিন্তু বিরোধীরাও এত সহজে হার মানতে নারাজ৷ গতকালই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন৷ 

আরও পড়ুন- গদি বাঁচিয়ে ‘বিদেশি চক্রান্তকারী’ চেনালেন ইমরান, বিস্ফোরক দাবি

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের তরফে সমস্ত আবেদনকারীদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে৷ পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া এবং অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের বিরোধিতায় একাধিক পিটিশন দাখিল করা হয়েছে৷ আজ অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত সেই শুনানি  স্থগিত রাখা হয়েছে৷ এদিকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, “সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেওয়া হয়েছে৷ বিরোধী জোট এত সহজে পার্লামেন্ট ছেড়ে যাবে না। আমাদের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। যে ভাবেই হোক আমরা পাকিস্তানের সংবিধানকে রক্ষা করবই। আজই সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আর্জি জানাব আমরা৷” 

এরপরই সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে বার কাউন্সিল, প্রতিরক্ষা সচিব, অন্তর্বর্তী সচিব, পঞ্জাবের অ্যাডভোকেট জেনারেল ও সমস্ত রাজনৈতিক দল সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে। অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খানকেও এই মর্মে নোটিস পাঠানো হয়েছে৷ এদিকে, পিটিশন দাখিলের পরই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ দেশের প্রতিরক্ষা সচিব ও অন্তবর্তী সচিবকে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। দেশের সাধারণ মানুষের কাছেও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করা হয়েছে৷ 

একইসঙ্গে পাক শীর্ষ আদালত সরকারের সিদ্ধান্তে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে৷ পাশাপাশি পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভাঙার সম্পূর্ণ রিপোর্টও চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর,  দেশে দ্রুত নির্বাচন চায় শীর্ষ আদালতও। এর জন্য শাসক ও বিরোধী শিবিরকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসার কথাও বলা হতে পারে।  

পার্লামেন্ট ভাঙার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন করে নির্বাচন হওয়ার কথা পাকিস্তানে৷ কিন্তু, মাঝের এই তিন মাস কী চলবে দেশ? এমতাবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে৷ অথবা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের হাতে দুটি বিকল্পই রয়েছে। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হলে ইমরান খানের স্বপক্ষেই মানুষের সমর্থন বাড়বে৷