হ্যানয়: সবুজ ঘেরা পাহাড়ের কোলে উঁকি দিচ্ছে শ্বেতশুভ্র একফালি সেতু৷ যার হাত ধরে ঘটেছে এক পাহাড়ের সঙ্গে অন্য পাহাড়ের মেলবন্ধন৷ তার পর পাহাড়ের কোল ঘেষে বহু দূর চলে গিয়েছে এই সেতু পথ৷ যা খালি চোখে আর ধরা পড়ে না৷ তবে আর পাঁচটা সেতুর থেকে ভিয়েতনামের এই সেতু অনন্য৷ কারণ, এটি কংক্রিটের নয়, বরং তৈরি হয়েছে কাঁচ দিয়ে৷ পাহাড়-অরণ্যের মাঝে ৪৯২ ফুট উঁচুতে নির্মিত এই সেতুই বিশ্বের দীর্ঘতম কাঁচের সেতু বলে দাবি করা হচ্ছে৷ শনিবার পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হল পৃথিবীর সেই ‘দীর্ঘতম কাচের সেতু’ ‘দ্য ব্যাচ লং পেডেস্ট্রিয়ান’৷ স্থানীয় ভাষায় ব্যাচ লং-এর অর্থ ‘সাদা ড্রাগন’৷
আরও পড়ুন- করোনার নতুন ঢেউয়ে বাড়ছে মৃতের হার, সতর্কতা হু-র
‘‘দ্য ব্যাচ লং’-এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩২ মিটার৷ এটি ভিয়েতনামের তৃতীয় কাঁচের সেতু৷ উত্তর-পশ্চিম ভিয়েতনামের সন লা-তে নির্মিত এই ঝুলন্ত সেতুটির মেঝে তৈরি হয়েছে এক বিশেষ ধরনের ‘টেম্পার্ড গ্লাস’ দিয়ে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এই সেতুর উপর দিয়ে একসঙ্গে হেঁটে যেতে পারবেন ৪৫০ থেকে ৫০০ পর্যটক৷ সেতুর উপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যাবে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য৷ চারিদিকে সবুজ আর সবুজ৷ নীচে রয়েছে বিস্তীর্ণ অরণ্য আর নদী খাত। উপর থেকে নীচে তাকালে অনেকেরই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে৷
এতদিন পৃথিবীর দীর্ঘতম কাঁচের সেতুর তকমা ছিল চিনের গুয়াংডংয় প্রদেশে অবস্থিত ৫২৬ মিটার সেতুর নামে৷ সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন নজির গড়ল ‘দ্য ব্যাচ লং’৷ নয়া রেকর্ডে দারুণ খুশি ভিয়েতনাম প্রশাসন। ইতিমধ্যেই নবনির্মিত এই সেতু দেখতে ভিড় জমতে শুরু করেছে পর্যটকদের। ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এই ঝুলন্ত কাঁচের সেতু দেখতে ভিড় জমাবেন বলে আশা ভিয়েতনামের পর্যটন দফতরের।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>
দৈর্ঘের দিক থেকে ‘দ্য ব্যাচ লং’ আরবের বুর্জ খালিফা টাওয়ারের উচ্চতার তিন চতুর্থাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি৷ ভিয়েতনাম যুদ্ধের ৪৭তম বর্ষের স্মরণে এই সেতু তৈরি করেছে ভিয়েতনাম সরকার৷ দুই পাহাড়ের মাঝে প্রায় ২ হাজার ফুট ব্যবধানকে যুক্ত করেছে ব্যাচ লং৷ সদ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের অন্তভুক্ত হওয়া কাঁচের সেতুটি স্থাপত্যের অপরূপ নির্দর্শন৷ তবে এই সেতু তৈরির জন্য প্রকৃতির কোনও ক্ষতিসাধন হয়নি৷ বরং পাহাড়-অরণ্য আবৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সংরক্ষিত রেখেই গড়ে উঠেছে ব্যাচ লং৷ তবে স্বচ্ছ কাঁচের এই সেতুর উপর দিয়ে চলার সময় গা শিউড়ে উঠতেই পারে৷ কারণ চলার সময় পায়ের তলায় স্পষ্ট গভীর সবুজ ঘন বনানী৷