নীল জলরাশির আড়ালে গোলাপের প্রবাল, বিস্ময়ে পরিবেশবিদরা

নীল জলরাশির আড়ালে গোলাপের প্রবাল, বিস্ময়ে পরিবেশবিদরা

প্যারিস:  রহস্যে ভরা আমাদের এই বিশ্ব প্রকৃতি৷ যার কিনারা করা সাধারণ মানুষের কাজ নয়৷ প্রকৃতি আমাদের বারবারে অবাক করেছে৷ এমনই এক চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখা গেল প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে তাহিতি দ্বীপে৷ সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ৩ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে গোলাপ আকৃতির প্রবাল৷ যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়৷

আরও পড়ুন- অতিমারী পর্বে আরও ধনী বিশ্বের ধনকুবেররা, সম্পত্তি বেড়েছে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার 

কিন্তু পরিবেশবিদরা যে বিষয়টি ভেবে সবচেয়ে বেশি অবাক, সেটা হল,  বৈশ্বিক উষ্ণায়নের যে ভাবে গোটা বিশ্বে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তার পরেও কী ভাবে অক্ষত রয়েছে এই প্রবাল। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, এই প্রবালগুলি অক্ষত থাকার অন্যতম কারণ হল গভীর সমুদ্রে অবস্থান৷  প্রশান্ত মহাসাগরের তাহিতি দ্বীপে নীল জলরাশির নীচে লুকিয়ে রয়েছে এই গোলাপ প্রবাল৷ 

সমুদ্রের তলদেশে প্রথম এই প্রবালপ্রাচীরটির খোঁজ পান ফ্রান্সের একটি সাঁতারু দল। সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যালেক্সিস রোজেনফিল্ড নামের এক ফরাসি আলোকচিত্রী। চোখের সামনে প্রবালপ্রাচীরের এই রূপ দেখে মোহিত রোজেনফিল্ডের বলেন, ‘বিশাল আকারের অপরূপ গোলাপ প্রবালগুলি দেখে আমি অভিভূত৷ আমরা দৃষ্টিসীমার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সেগুলি ছড়িয়ে ছিল। যেন কোনও কারিগরের  শিল্পকর্ম।’

বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে বাড়ছে সমুদ্রের তাপমাত্রাও৷ হারিয়ে যাচ্ছে প্রবালের নজরকাড়া রঙ। তাপমাত্রার বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। ২০১৬ সাল থেকে ২০২১-এর মধ্যে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেখানকার ৮০ শতাংশ প্রবাল৷ ইউনেসকোর তথ্য অনুযায়ী,  সাধারণত উষ্ণ জলে প্রাচীরগুলির অবস্থান সর্বোচ্চ ২৫ মিটার গভীরে হয়ে থাকে৷ কিন্তু তাহিতির প্রবালপ্রাচীরটির গভীরতা ৩০ থেকে ১২০ মিটারের মধ্যে। এতটা গভীরতায় সূর্যের আলো ভাবে ভাবেই পৌঁছতে পারে যাতে  প্রবাল বেড়ে ওঠতে এবং  টিকে থাকতে পারে৷ 

প্রশান্ত মহাসাগরে তাহিতির এই প্রবালপ্রাচীরের খোঁজ মেলোর পর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মহাসাগরগুলির গর্ভে হয়তো লুকিয়ে রয়েছে এমন আরও অনেক প্রবাল রহস্য৷ ইউনেসকোর বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, সাগরের তলদেশের মাত্র ২০ শতাংশ রহস্য প্রকট হয়েছে৷ এখনও বহু রহস্যের সমাধান বাকি রয়ে গিয়েছে৷ 


 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *