নয়াদিল্লি: দুই দশক আগের সেই আতঙ্ক আজ ফের ধীরে ধীরে গ্রাস করতে শুরু করেছে আফগানিস্তানকে৷ মুখোশ বদলালেও মুখ বদলায়নি তালিবানের৷ নিজের জীবন দিয়ে সে কথা উপলব্ধি করেছেন প্রাক্তন আফগান পুলিশ কর্মী খাতেরা হাশমি৷ তালিবানি ফতোয়া উপেক্ষা করে বাড়ির বাইরে পা রেখেছিলেন তিনি৷ কর্মরতা খাতেরাকে শুধু কুপিয়েই খান্ত হয়নি তালিবান৷ উপড়ে নিয়েছে তাঁর দুটি চোখ৷
আরও পড়ুন- আফগান যৌনকর্মীদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত, পর্নসাইট ঘেঁটে তালিকা প্রস্তুত করছে তালিবান
খাতেরা হাশমি এখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ কিন্তু তাঁর পরিবার ও সন্তানেরা পড়ে রয়েছে আফগানিস্তানে৷ দৃষ্টিহীন চোখ বেয়ে ঝরে পড়ছে অবিরাম অশ্রুধারা৷ তিনি বলেন, তাঁর প্রাণে বেঁচে যাওয়ার খবর চলে গিয়েছে তালিবানের কাছে৷ যা শুনে মোটেই খুশি নয় তারা৷ ফলে দেশে ফিরলে মৃত্যু অনিবার্য৷ সন্তানদের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য মন ছটফট করছে তাঁর৷ কিন্তু দেশের মাটিতে পা রাখলেই নেমে আসবে মৃত্যুর খাড়া৷ তাঁর কথায়, ‘‘তালিবানের কাছে সবথেকে বড় অপরাধ হল একজন মেয়ের কাজ করতে ঘরের বাইরে পা রাখা। আমার সঙ্গে যে নির্মম অত্যাচার হয়েছে, তা সে দেশের আরও বহু মেয়ের সঙ্গে ঘটে চলেছে। কিন্তু ভয়ে কারও মুখ খোলার সাহস নেই৷’’
আরও পড়ুন- তালিবানের গুলিতে নিহত শিশুসহ একাধিক আফগান! পঞ্জশির ‘দখলে’র উল্লাসে তাণ্ডব
তালিবানি অত্যাচার তো বটেই, খাতেরা হাশমির জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি হল, তাঁর এই অবস্থার জন্য দীয়া তাঁর বাবা৷ তালিবানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনিই মেয়ের দিকে ঠিলে দিয়েছিল নৃশংস মানুষগুলিকে৷ সে কথা ভাবতেই ধক করে ওঠে তাঁর বুক৷ তিনি বলেন, একদিন কাজ থেকে ফেরার সময় বাড়ির একদম কাছে তাঁর উপর চড়াও হয় তালিবানরা। প্রথমেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। তারপর ছুরি দিয়ে উপড়ে নেওয়া হয় তাঁর দুটি চোখ৷ ভারতে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন খাতিরা৷ কিন্তু এখন সারা দেশ তালিবানের দখলে৷ তাই দেশের ফেরার পথ একপ্রকার বন্ধ৷