কলকাতা: মহাকাশের মহামায়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের ঔধসুক্য চিরন্তন৷ মহাকাশে যে সে রয়েছে, সেটা বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই জানতেন৷ তাকে নিয়ে গবেষণা করে ২০২০ সালে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন পদার্থবিজ্ঞানী। কিন্তু ছায়াপথের (মিল্কি ওয়ে নক্ষত্রপুঞ্জ) কেন্দ্রে থাকা কৃষ্ণগহ্বরের (সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল) কোনও ছবি এত দিন বিজ্ঞানীদের হাতে ছিল না। বৃহস্পতিবার মহাকাশপ্রেমীদের কাছে সেই ‘শান্ত দৈত্য’ বা ব্ল্যাক হোলর ছবি পৌঁছে দিলেন বিজ্ঞানীরা। এই ব্ল্যাক হোলের ছবি ধরা পড়ল ‘ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ’ প্রজেক্টে। বিজ্ঞানীরা যার পোশাকি নাম দিয়েছেন ‘স্যাজিট্যারিয়াস-এ’।
আরও পড়ুন- আপাতত টুইটার কিনছেন না এলন মাস্ক! ডিল স্থগিত, বার্তা মাস্কের
অনেকেই মনে করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানে এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। সম্প্রতি এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস’ নামে এক পত্রিকায়৷ আর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের সঙ্গে গড়ে উঠেছে বঙ্গ যোগ৷ কারণ এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো কৌশিক চট্টোপাধ্যায়৷ যিনি দমদম নাগের বাজারের বাসিন্দা৷ এ বিষয়ে কৌশিকের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও, ছেলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়৷ তিনিই জানান, খড়গপুর আইআইটি থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করে বিলেতে পাড়ি দেন তাঁর ছেলে৷ আমস্টারডাম থেকে পিএইচডি শেষ করে পোস্ট-ডক্টরেট করতে আমেরিকায় যান কৌশিক। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ব্ল্যাক হোল সংক্রান্ত গবেষণায় বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন আরও এক বঙ্গসন্তান, পুণের আইইউকা-র সহকারী অধ্যাপক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়। তবে তাঁর সেই গবেষণার সঙ্গে এই ব্ল্যাক হোলটির সম্পর্ক নেই৷
কিন্তু ব্ল্যাক হোল আদতে কী? আসল কৃষ্ণ গহ্বর হল একটি মহাজাগতিক বস্তু, যার ভর অত্যন্ত বেশি। আর ঠিক সেই কারণেই ব্ল্যাক হোলের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও অত্যন্ত প্রবল৷ এমনকী আলোর পক্ষেও এর আকর্ষণ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়৷ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছায়াপথের কেন্দ্রে থাকা এই সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের ভর সূর্যের প্রায় ৪০ লক্ষ গুণ বেশি৷
প্রায় তিন বছর আগে অন্য একটি নক্ষত্রপুঞ্জের সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের ছবি পেয়েছিলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এবার মিলল ‘স্যাজিট্যারিয়াস-এ’র ছবি। তবে ছায়াপথের এই কৃষ্ণগহ্বরটিও পৃথিবীর কাছে নয়। নীলগ্রহ থেকে এর দূরত্ব ২৭ হাজার আলোকবর্ষ। অর্থাৎ আলোর গতিতে ছুটলে পৃথিবী থেকে স্যাজিট্যারিয়াস-এ’র কাছে পৌঁছতে ২৭ হাজার বছর লেগে যাবে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>