কখন খুন করবে তালিবান? অপেক্ষায় দেশের প্রথম মহিলা মেয়র

কখন খুন করবে তালিবান? অপেক্ষায় দেশের প্রথম মহিলা মেয়র

কাবুল: ধীরে ধীরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন তারা, স্বপ্ন সত্যিইও হচ্ছিল অল্প অল্প করে। কিন্তু আবার সেই স্বপ্ন ধ্বংস হলো তাও আবার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে। আফগানিস্তান দখল নিয়েছে তালিবানরা। প্রায় ২০ বছরের বিদ্রোহ হার মেনেছে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে। দেশের মহিলারাই এখন সবথেকে বেশি অসুরক্ষিত কারণ তালিবানরা তাদের সঙ্গে কী করতে পারে সেই ধারণা প্রত্যেকেরই রয়েছে। সেই ভয়ই পাচ্ছেন দেশের প্রথম মহিলা মেয়র তথা কনিষ্ঠতম মেয়র জারিফা গাফারি। তিনি এখন অপেক্ষা করছেন কবে তাঁকে তালিবান গুলি করে খুন করবে।

জারিফা আশরাফ গনি সরকারের কর্মী ছিলেন কিন্তু সেই গনি ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তবে তার মত অনেকেই পালাতে পারেননি, তাই তালিবানের ভয় এবং আতঙ্কে এখন মৃত্যুর অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। তালিবানরা শিক্ষিত এবং কর্মরত মহিলাদের কিছুতেই পছন্দ করে না। তাই জারিফার মত মহিলারা যে তাদের নৃশংসতার শিকার হবে তা বলাই বাহুল্য। আর সেই কারণেই হয়তো নিজের নির্মম ভবিষ্যতের কথা এখন থেকেই ভেবে ফেলেছেন তিনি। এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, তার অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তাই পরিবারের সঙ্গে অপেক্ষা করছেন কখন তালেবান জঙ্গিরা তাকে খুন করবে। জারিফার কথায়, তাদের সাহায্য করার কেউ নেই, আর তাদের মত মানুষের খোঁজ পেতে তালিবানের বেশি সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত এর আগে কমপক্ষে তিনবার তার ওপর হামলা করেছিল তালিবান কিন্তু কিছু করতে পারেনি। পরে অবশ্য তার বাবাকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে তারা। কিন্তু এখন যে পালিয়ে বাঁচা আর সম্ভব হবে না সেটা খুব ভালো করে বুঝে গেছেন জারিফা। 

আরও পড়ুন- প্রাণ বাঁচাতে এক কাপড়ে দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা, কাবুলে পদপৃষ্ঠ অসহায় জনতা

ইতিমধ্যেই মহিলাদের জন্য একাধিক ফতোয়া জারি করেছে তালিবান। স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, রক্তের সম্পর্ক রয়েছে এমন পরিবারের সদস্যের সঙ্গেই একমাত্র রাস্তায় বেরোতে পারবেন আফগানি মহিলারা। এছাড়া শুধুমাত্র স্বামীর সঙ্গে রাস্তায় বেরোনো যাবে, আর কোন ভাবে তারা রাস্তায় বেরতে পারবেন না। একইসঙ্গে রাস্তায় বেরোলে বোরখা এবং হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে মহিলাদের পায়ের শব্দ যাতে অন্য পুরুষের কানে না যায় সেই জন্য হিল জুতো পরা যাবে না, মহিলাদের গলার আওয়াজ যাতে অন্য পুরুষের কানে না যায় সেজন্য উঁচু গলায় কথা বলা যাবে না! বাড়ির মহিলারা ব্যালকনিতে আসতে পারবেন না, চাকরি করতে পারবেন না, পড়াশোনা করতে পারবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + 2 =