চারপাশ গিলে খাচ্ছে এই গর্ত! সাইবেরিয়ায় খুলে গেল ‘নরকের দরজা’

চারপাশ গিলে খাচ্ছে এই গর্ত! সাইবেরিয়ায় খুলে গেল ‘নরকের দরজা’

কলকাতা: প্রকৃতির আজব খেলা বোঝার সাধ্য আমার আপনার নেই৷ পৃথিবীতে এমন অনেক কিছুই রয়েছে যা কল্পনাতীত৷ তেমনই এক অদ্ভূত দৃশ্য দেখা গিয়েছে রাশিয়ার সাইবেরিয়া প্রদেশে৷ স্থানীয় গ্রামবাসীরা একটি বিশাল গর্ত আবিষ্কার করেছে, যার মধ্যে ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে চারপাশের অঞ্চল৷ সবকিছু নিজের মধ্যে টেনে নিচ্ছে সে৷ স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন ‘ডোরওয়ে টু আন্ডারওয়ার্ল্ড’ বা ‘মাউথ টু হেল’৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এই গর্তের আকার৷ 

আরও পড়ুন- যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেন ছাড়তে নারাজ! পোষ্য প্যান্থার-জাগুয়ারের জন্য বম্ব শেল্টার বানালেন ভারতীয় চিকিৎসক

সাইবেরিয়ার ইয়াকুটিয়ার বাতাগায়ে এই বিশাল গর্তটি দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। বাটাগাইকা ক্রেটার নামে পরিচিত এই গর্তটি পৃথিবীর পৃষ্ঠে একটি রহস্য৷ যা প্রথম ১৯৮০ সালে পরিমাপ করা হয়৷ এরপর থেকে, এই গর্তের দৈর্ঘ্য ১ কিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গভীরতা বেড়ে হয়েছে ৯৬ মিটার বা ২৮২.১ ফুট৷ বলা হচ্ছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে যে মাটি বেড়িয়ে আসছে তার বয়স ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ বছর। গর্তের সবচেয়ে নীচের স্তরটি ৬ লক্ষ বছর পুরানো। এটি ইউরেশিয়ার প্রাচীনতম খোলা গর্ত।  

 

যে গতিতে এই গর্ত তার আশপাশের এলাকা গিলে খাচ্ছে তাতে একে ‘নরকের দরজা’ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে নারাজ স্থানীয়রা। ফি বছর ২০ থেকে ৩০ মিটার বৃদ্ধি পায় এই গর্তের পরিমাণ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে গর্তের পরিমাণ বাড়তে থাকলে অচিরেই গোটা এলাকার তলিয়ে যাবে এই গহ্বরের অতলে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই গর্তের বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল, আশেপাশের মাটিতে গত ২ বছর ধরে খুব কম তাপমাত্রা৷ যেহেতু সাইবেরিয়ার তাপমাত্রা শূন্যের নিচে থাকে, তাই এখানে মাটির আর্দ্রতা বড় কথা নয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে মাটি ক্রমেই ধসে যাচ্ছে, তা ২৫ লক্ষ বছর আগে জমাট বেঁধেছে। ১৯৬০ সালে এখানে বন-জঙ্গল পরিষ্কার করার পর সেখানে সূর্যের তাপ এবং আলো পৌঁছয়৷ যার কারণেই এখানে মাটি গলে গিয়ে বসতে শুরু করে। এটি পরিবেশের পক্ষে একবারেই হিতকর নয়৷ এটি বিপজ্জনক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে, যার দরুণ তাপমাত্রা বাড়তে পারে। মনে করা হয়, এভাবেই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এমন আরও নরকের দরজা দেখা যাবে।