ওয়াশিংটন: লাল গ্রহের বুকে লুকিয়ে থাকা জলের খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা৷ যদিও দু’ বছর আগেই মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণে একটি সুবিশাল নোনা জলের হ্রদ আবিষ্কার করেছিলেন বিজ্ঞানীরা৷ এই হ্রদের পাশেই আরও তিনটি হ্রদ বরফের নীচে চাপা পড়ে রয়েছে৷ এবার সেই হ্রদগুলিরই সন্ধান মিলল৷
আরও পড়ুন- রাস্তা সারাতে জীবানু ব্যবহার, নিজে থেকে সেরে উঠবে রাস্তার গর্ত! জানাল বিজ্ঞান মন্ত্রক
সোমবার নেচার অ্যাস্ট্রোনমি-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহে আরও তিনটি নোনা জলের হ্রদের সন্ধান পেয়েছেন৷ ফলে ভবিষ্যতে মঙ্গলের দিকে পা বাড়ালে এই জল কাজে আসতে পারে৷ বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচারকে রোম বিশ্ব বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এলিনা পেট্টিনেল্লির বলেন, ‘‘আমরা এই জলেরই বৃহত্তম অংশটি আগেই খুঁজে পেয়েছিলাম৷ এবার মূল জলাশয়ের চারপাশে আরও তিনটি হ্রদের সন্ধান মিলেছে৷’’ এই হ্রদগুলি প্রায় ৭৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ যা গোটা জার্মানির প্রায় এক পঞ্চমাংশ৷ এই পত্রিকায় আরও বলা হয়েছে, মঙ্গল গ্রহে জল তরল অবস্থায় পাওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৮ সালে যে হ্রদটি মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণে আবিষ্কার হয়, সেটিও বরফ দিয়ে আচ্ছাদিত। এটি প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে। এটিই এখনও পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে পাওয়া সবচেয়ে বৃহত্তম হ্রদ৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি জলাশয় থাকে তাহলে মঙ্গলীয় জীবনের সম্ভাব্য আবাসও হতে পারে৷
এই হ্রদগুলি আবিষ্কারের জন্য মঙ্গলের কক্ষপথে চক্কর কেটেছে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)-র মার্স এক্সপ্রেস স্পেসক্রাফ্ট৷ ২০১৮ সালে মার্স এক্সপ্রেস এমন একটি জায়গা আবিষ্কার করে যেখানে বরফের নিচে লবণাক্ত জলের হ্রদ রয়েছে বলে দাবি করা হয়। ২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত চালানো সমীক্ষার উপর ভিত্তি করেই এই অঞ্চলে শুরু হয় মার্স এক্সপ্রেসের চক্কর কাটা৷ হ্রদের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে প্রায় ২৯ বার ওই এলাকা প্রদক্ষিণ করে ছবি তোলা হয়েছে৷ এর পরই হ্রদের বিষয়ে নিশ্চিত হন বিজ্ঞানীরা৷
আরও পড়ুন- কল্পনা চাওলার নামে হবে নাসার পরবর্তী মহাকাশ যানের নাম! রওনা হচ্ছে মহাকাশে
আগে মঙ্গলগ্রহকে একটি জলহীন গ্রহ ভাবা হত৷ কিন্তু দু’ বছর আগে সেই ধারণা ভেঙে যায়৷ অবশ্য বিজ্ঞানীরা বহুদিন আগে জানিয়েছিলেন, মঙ্গলগ্রহে একসময় প্রচুর পরিমাণে জল প্রবাহিত হত। তিন বিলিয়ন বছর আগে জলবায়ুতে বড় ধরনের পরিবর্তনের কারণে মঙ্গল গ্রহের সমস্ত রূপ পরিবর্তিত হয়েছিল বলেই মনে করেন বিজ্ঞানীরা৷