নয়াদিল্লি: বর্তমানে জীবানুর গ্রাসে সমগ্র পৃথিবী। লড়াই চলছে অদেখা জীবানু করোনার সঙ্গে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আর এক এমন জীবানুর সন্ধান মিলেছে যা কিনা সারাই করতে পারবে রাস্তা। যার ফলে কমে যাবে পথ দুর্ঘটনা, অনেকাংশে বাঁচবে রাস্তা সারাইয়ের খরচও। রাস্তা তৈরির সময় প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সঙ্গে এই জীবানুকে মিশিয়ে দিতে হবে। বেঙ্গালুরুর একটি গ্রামে সম্প্রতি এই পরীক্ষার সাফল্য দেখা গিয়েছে, তাই সারা দেশে এই পদ্ধতি চালু করার প্রস্তুতি শুরু করেছে মন্ত্রক।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতায় থাকা টিআইএফএসির বা টেকনোলজি ইনফর্মেশন ফোরকাস্টিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট কাউন্সিলের বিজ্ঞানী গৌতম গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘এমন অভিনব উদ্যোগ এর আগে কখনও নেওয়া হয়নি। স্বয়ংক্রিয় রাস্তা সারাইয়ের এই পদ্ধতির সবকটি দিক এই মুহূর্তে আমরা খতিয়ে দেখছি। এতে আর্থিকভাবে কী প্রভাব পড়তে পারে, তাও দেখা হচ্ছে।” পাশাপাশি এই পুরো প্রক্রিয়াটা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ঘটবে। তাই দ্রুত এদি বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রক।
জীবাণুর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাস্তা মেরামতি করতে, রাস্তা তৈরির সময়ই বিশেষ পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সঙ্গে মাইক্রোবস জীবানু মেশাতে হবে। জল-হাওয়ার সংস্পর্শে না এলে ওই জীবানুর কোনও কার্যক্ষমতা থাকবে না। জল-হাওয়ার সংস্পর্শে আসার পর যে মুহূর্তে সংশ্লিষ্ট রাস্তায় ফাটল বা গর্ত তৈরি হবে, ঠিক তখনই কাজ শুরু করবে ওই জীবানু। বিজ্ঞান মন্ত্রক তরফে জানানো হয়েছে জল ও হাওয়া একমাত্র খাদ্য ওই জীবানুর। তাই গর্ত বা ফাটল তৈরি হলেই সেগুলি জল ও হাওয়ার সংস্পর্শে আসবে, শুরু করবে বংশবিস্তার। সেইসময় বিশেষ ওই জীবাণু থেকে নির্গত হবে ক্যালসাইট-টাইপ নামে এক ধরনের রাসায়নিক বস্তু। যা ক্যালসিয়ামের একটি প্রকার। ওই ক্যালসাইট-টাইপ বস্তুটিই দ্রুত রাস্তার গর্ত বোজানোর কাজ করবে। বিজ্ঞানী গৌতম বাবুর কথায়, রাস্তা তৈরির সামগ্রীর সঙ্গে ন্যানো-ফাইবার মিশিয়েও স্বয়ংক্রিয় এই পদ্ধতির প্রয়োগ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে মাইক্রোবসের দরকার পড়বে না। তাই মন্ত্রক দু’টি পদ্ধতিরই তুলমূল্য বিচার করছে। দুটি পদ্ধতিতেই সময় বাঁচবে অনেকটাই।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রামে এই পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাতে সাফল্য মিলেছে। যদিও সেই পরীক্ষায় ফ্লাই-অ্যাশ ও সিমেন্টের পাশাপাশিই ন্যানো-কোটিংয়ের ব্যবহারও হয়েছে। কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বড় গর্ত এই প্রক্রিয়ায় সেরে উঠবে না। সেই ক্ষেত্রে কিভাবে একে কাজ করানো যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।