কলকাতা: মিশন কমপ্লিট। এবার ফেরার পালা। যে কাজে তাকে পাঠানো হয়েছিল, তা সেরেই পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ‘মৃত’ এক কৃত্রিম উপগ্রহ। ১৯৮৪ সালে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল আর্থ রেডিয়েশন বাজেট স্যাটেলাইট বা সংক্ষেপে ইআরবিএস-কে৷ দীর্ঘ ৩৯ বছর বছর পর পৃথিবীতে আবার ফিরে আসছে সেই কৃত্রিম উপগ্রহ।
আরও পড়ুন- প্রতি মুহূর্তে লাভার উদগীরণ! হাজার হাজার আগ্নেয়গিরি ফুঁসছে বৃহস্পতির চাঁদে
১৯৮৪ সালের ৫ অক্টোবর, বেশ কিছু দায়িত্ব কাঁধে পৃথিবী থেকে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল ইআরবিএস। এই উপগ্রহ ছিল নাসার একটি বিশেষ অভিযানের অংশ৷ মূলত, পৃথিবীর শক্তি বিকিরণ ক্ষমতার পর্যালোচনা ও পরীক্ষার উদ্দেশ্যে ‘আর্থ রেডিয়েশন বাজেট এক্সপেরিমেন্ট’ নামের একটি অভিযানে শামিল হয়েছিল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এই অভিযানের অংশ হিসাবে কাজে লাগানো হয় ৩টি কৃত্রিম উপগ্রহকে৷ তাদের মধ্যে একজন হল ইআরবিএস৷
সূর্য থেকে কী ভাবে পৃথিবী শক্তি সঞ্চয় করে, কী ভাবে সেই শক্তি বিকিরিত হয়, তা পর্যালোচনা করে দেখাই ছিল ইআরবিএস-এর মূল কাজ। পাশাপাশি, স্ট্র্যাটোস্ফেরিক ওজোন, জলীয় বাষ্প, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং সূক্ষ্ম গ্যাসীয় কণার পরিমাপ করার দায়িত্ব পালন করে এই উপগ্রহ।
কৃত্রিম উপগ্রহ ইআরবিএস-এর মধ্যে মোট তিনটি যন্ত্র ছিল। পৃথিবীর বিকিরণ শক্তি পরিমাপের জন্য দু’টি এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে গ্যাসের পরিমাণ মাপার জন্য একটি৷ উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠানোর সময় নাসার বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা ছিল, কমপক্ষে ২ বছর মহাকাশে ক্রিয়াশীল থাকবে ইআরবিএস। সেই প্রত্যাশা অনেক আগেই পূরণ হয়েছিল। উল্টে ২ বছরের চেয়ে অনেক বেশি সময় মহাকাশে ছিল এটি৷ ২০০৫ সাল পর্যন্ত ক্রিয়াশীল ছিল৷ তবে এতদিন মহাকাশেই ঘুরছিল সে৷
পৃথিবীর বিকিরণের ভারসাম্যের উপর মানুষের কার্যকলাপের প্রভাব সম্পর্কিত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে পৌঁছে দিয়েছে ইআরবিএস। তার হাত ধরেই নাসার অভিযান সফলতা পায়৷ নিজের কাজ শেষ কররা পর মহাকাশেই ঘুরছিল ইআরবিএস। এতদিনে তার ফেরার পালা। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে এই ‘মৃত’ কৃত্রিম উপগ্রহটি৷
নাসার তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসার সময়ই ইআরবিএস-এর অধিকাংশ অংশই পুড়ে যাওয়ার কথা। তবে সবটা শেষ হয়ে যাবে না৷ কিছু অংশ অবশিষ্ট থেকে যাবে৷ যা প্রবেশ করবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে। পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের পর অবশ্য আকাশেই বাকি অংশটুকু ধ্বংস হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এলেই ইআরবিএস-এ আগুন ধরে যাবে। ফলে মাটিতে পড়ার আগেই তা ধ্বংস হয়ে যাবে৷ ইআরবিএস-এর প্রত্যাবর্তন এবং আকাশে তাক ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কোনও প্রভাব পৃথিবীর উপর পড়বে না বলেই জানিয়েছে নাসা।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>