নয়াদিল্লি: ফের চাঁদে যাওয়ার প্রস্তুতি! তবে কি আরও একবার পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের মাটি ছোবে মানুষ? বুধবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা চন্দ্র অভিযানের জন্য রকেট পাঠাতেই মাথাচাড়া দিয়েছে এই জল্পনা। বুধবার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এই রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়৷ সেই সঙ্গেই চাঁদে মানুষ পাঠানোর পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল নাসা৷
আরও পড়ুন- ৩০০০ সালে বদলে যাবে মানব শরীরের গঠন, জানেন কেমন দেখতে হবে মানুষ?
সূত্রের খবর, ওই মহাকাশযানে করে চাঁদে যাচ্ছে মানুষের ডামি৷ চাঁদের বুকে মহাকাশচারীরা পা রাখার আগে পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজ করা হয়েছে বলে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে খবর। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী তিন সপ্তাগের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে ঢুকে পড়বে এই মহাকাশ যান৷ সেখানে নামানো হবে একটি ‘ক্রু ক্যাপসুল’৷ সরাসরি এই মহাকাশযানটি চাঁদের মাটিতে নামবে না৷ সেই জন্য যে বিশেষ যানটি ব্যবহার করা হবে, তার নামই ক্রু ক্যাপসুল৷ ওই ক্যাপসুলের মধ্যে কোনও মানুষ থাকবে না। থাকবে তিনটি ম্যানিকুইন৷ মানুষকে চাঁদে পাঠানো হলে সেখানে তাদের কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতেই এই ম্যানিকুইন পাঠানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই ক্যাপসুল চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ফের পৃথিবীতে ফিরে আসবে। প্রশান্ত মহাসাগরে ওই ক্যাপসুলকে ফিরিয়ে আনা হবে৷
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, এই মহাকাশযানের মধ্যে যে মানববহণকারী ক্যাপসুলটিকে পাঠানো হয়েছে, তা একেবারে সামনের দিকে রাখা হয়েছে। এর আগে জ্বালানি ট্যাঙ্কের সমস্যার কারণে ওই রকেট উৎক্ষেপণ নিয়ে বেশ সমস্যার পড়তে হয়েছিল নাসাকে। কারণ বারবার জ্বালানি বেরিয়ে যাচ্ছিল৷ উৎক্ষেপণের ঠিক আগের দিন এই সমস্যায় পড়েছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা৷ অবশেষে বুধবার সফল উৎক্ষেপণ করা হল৷ নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আর্টেমিস প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে এই রকেটের উৎক্ষেপণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত, প্রথমবার চাঁদের মাটি ছোয়ার পর পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। ফের নতুন করে চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে মানুষকে পাঠাতে উদ্যোগী হয়েছে নাসা। সেই জন্যই আর্টেমিস প্রজেক্ট শুরু করা হয়েছে। আগামিদিনে এই মিশনের মাধ্যমেই মহাশূন্যে মানুষ পাঠিয়ে গবেষণা চালানো হবে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই চন্দ্রযানে যে ক্যাপসুলটি পাঠানো হয়েছে, পৃথিবীতে ফিরে আসার আগে সেটি চাঁদের বেশ কিছু ছবি তুলে নিয়ে আসবে। ২০১৭-য় এই মহাকাশযানের ড্রাই রান করা হয়েছিল। নাসা সূত্রে খবর, সব অঙ্ক মিলে গেলে আগামী বছরের শেষের দিকে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানো হতে পারে।
চন্দ্রাভিযানের জন্য নাসার এই রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে এদিন উপচে পড়েছিল মানুষের ভিড়৷ নাসা-র বিজ্ঞানীদের দাবি, এর আগে একই রকম ভিড় দেখা গিয়েছিল ১৯৬৯ সালে। ওই বছর ১২ জন মহাকাশচারীর একটি দল চন্দ্রাভিযানের জন্য ‘অ্যাপোলো-১’ চড়ে মহাকাশের পথে পাড়ি দিয়েছিলেন৷ নাসার তরফে বলা হয়, “আমরা এবার ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছি। আরও একবার জায়গা করে নিতে চলেছি৷”
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>