কলকাতা: রহস্যে মোড়া আমাদের এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড৷ এর পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে অসংখ্য কাহিনি৷ সম্প্রতি টেলিস্কোপে চোখ রেখে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন বৃহস্পতির ১২টি চাঁদ৷ সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির কক্ষপথে ঘুরে চলেছে তারা। হালেই সেই উপগ্রহগুলির সন্ধান পেয়েছেন আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আর এই নয়া তথ্য সামনে আসতেই শনির ‘মুকুট’ কাড়ল গুরুগ্রহ বৃহস্পতি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দাবি, বৃহস্পতিকে কেন্দ্র করে তার কক্ষপথে ওই ১২টি উপগ্রহ সমেত মোট ৯২টি উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করে চলেছে। সেখানে শনির কক্ষপথে ঘুরছে ৮৩টি উপগ্রহ। এত দিন উপগ্রহের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে ছিল শনি। এবার সেই আসন হারাল গ্রহরাজ৷ সৌরজগতে সবচেয়ে বেশি উপগ্রহ মিলল বৃহস্পতির ঘরে।
আরও পড়ুন- সূর্যের গায়ে বিরাট এক কালো ছোপ, কেন এই অন্ধকার? ঘনাচ্ছে বিস্ময়
ওয়াশিংটনের ‘কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্স’-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কট শেপার্ডের নেতৃত্বে গঠিত পর্যবেক্ষণ দল বৃহস্পতির কক্ষপথে ওই ১২টি নতুন উপগ্রহ খুঁজে পান। সম্প্রতি আমেরিকার ‘মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার’ এই ১২টি উপগ্রহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সহ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতির পরিবারের এই সদস্যরা আকারে ক্ষুদ্র। আমেরিকার মাসিক পত্রিকা ‘স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ১২টি উপগ্রহই বৃহস্পতির কক্ষপথের দিকে মুখ করে গুরুগ্রহকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।
জোভিয়ান জগতের আরও গভীরে ঢুকে, তার সুলুকসন্ধান পেতে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা নাসা। তার বছরখানেক আগেই খুঁজে পাওয়া গেল এই ১২টি উপগ্রহকে৷ প্রসঙ্গত, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন— এই চারটি গ্রহ একত্রে জোভিয়ান জগৎ বলা হয়ে থাকে। এই উপগ্রহগুলিতে প্রাণ আছে কিনা, এরা বসবাসের উপযুক্ত কি না, সেটাও খতিয়ে দেখবেন বিজ্ঞনারী৷ সেই লক্ষ্যেই শুরু হবে নাসার অভিযান ইউরোপা ক্লিপার মিশন৷
বৃহস্পতির উপগ্রহ গ্যানিমিড সৌরমণ্ডলের সব থেকে বড় ‘চাঁদ’। ৫,২৬৮ কিলোমিটার ব্যাসের এই উপগ্রহটি বুধ গ্রহের চেয়েও আয়তনে বড়। তবে নতুন যে উপগ্রহগুলির খোঁজ মিলেছে তারা সেই তুলনায় আকারে নুড়ি মাত্র। পৃথিবী থেকে দেখলে বৃহস্পতির আপাত মান ২.৮। এটি পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান তৃতীয় উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। কেবল চাঁদ এবং শুক্র গ্রহের উজ্জ্বলতা এর চেয়ে বেশি। প্রাচীনকাল থেকেই এই গ্রহটি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষীদের কাছে অতি পরিচিত ও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রচুর পৌরাণিক কাহিনী এবং ধর্মীয় বিশ্বাসও আবর্তিত হয় এই বৃহস্পতিকে কেন্দ্র করে। রোমানরা গ্রহটির নাম রেখেছিল পৌরাণিক চরিত্র জুপিটারের নামে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>