বাংলা-পাঞ্জাবের পর বিহারেও মহা ধাক্কা ‘ইন্ডিয়া’ জোটে! এবার গেরুয়ামুখী নীতীশ কুমার?

বাংলা-পাঞ্জাবের পর বিহারেও মহা ধাক্কা ‘ইন্ডিয়া’ জোটে! এবার গেরুয়ামুখী নীতীশ কুমার?

নয়াদিল্লি: যে ইঙ্গিত গত ৪ জানুয়ারি দিয়েছিল ‘আজ বিকেল’, সেটাই কি তবে সত্যি হতে চলেছে? (ফের নীতীশের মন উড়ু উড়ু! গন্তব্য সেই বিজেপি?) শেষ মুহূর্তে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে নীতীশ কুমার কয়েক দিনের মধ্যেই এনডিএ শিবিরে যোগ দিতে চলেছেন। বৃহস্পতিবার জরুরি ভিত্তিতে নিজের দলের নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন নীতীশ। নীতীশের বৈঠক যখন চলছে তখনই বিহার বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব দিল্লিতে গিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে। অর্থাৎ দু’য়ে দু’য়ে চার করে নিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সদ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পাঞ্জাবের আম আদমি পার্টির মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান স্পষ্ট জানিয়ে  দিয়েছেন এই দুটি রাজ্যে তাঁরা একাই লড়বেন। কোনও জোট হবে না কংগ্রেসের সঙ্গে। যা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের পক্ষে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। কিন্তু এরপরেও কাহানিতে যে বেশ ‘টুইস্ট’ আসবে সেটা আর কে জানত!

বিগত কয়েক মাস ধরে বিজেপি যে চেষ্টা করছিল তা বুধবার কার্যত পূর্ণতা পেয়েছে বলেই সূত্রের খবর। শেষ পর্যন্ত নীতীশ কুমার কংগ্রেস, আরজেডি ও বামেদের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপির হাত ধরে ফের বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হবেন এবং লোকসভা ভোটে এনডিএ জোটের হয়েই লড়াই করবেন। এমন সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল বলেই খবর। যে কথা তিন সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিল ‘আজ বিকেল’। অর্থাৎ ‘ইন্ডিয়া’ জোট ফের একবার বড় ধাক্কা খেতে চলেছে।

ঘটনা হল বিহারবাসী নীতীশকে মজা করে ‘পাল্টু মামা’ বলে ডাকেন। কারণ নীতীশ কখন কোন শিবিরে থাকবেন সেটা বোধহয় নিজেও জানেন না। যখন যেখানে সুবিধা মিলবে বলে মনে করেন, সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। বিগত দু দশক ধরে একবার বিজেপি, একবার আরজেডি-কংগ্রেস, আবার বিজেপি, এভাবেই বিহারে মুখ্যমন্ত্রীর আসন ধরে রেখেছেন তিনি। উল্লেখ্য বিরোধীদের যে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠিত হয়েছে তার অন্যতম হোতা তিনি।

সকলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রবল বাসনা তাঁর রয়েছে। কিন্তু বিজেপি জোটে থাকলে সেটা কখনই সম্ভব নয়। তাই তিনি বিরোধী জোটে এসেছেন বলে রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন। কিন্তু সেখানেও তেমন সুবিধা করতে পারলেন না। কারণ এখনও পর্যন্ত এমন কোনও সম্ভাবনা তৈরি হয়নি যেখানে বিরোধীরা নীতীশকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চাইবে। অতঃপর নীতীশের মোহভঙ্গ এবং তিনি আবার বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন বলেই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছিল বেশ কয়েক দিন ধরেই। আসলে বিজেপির পালে যে হাওয়া রয়েছে, রাম মন্দির উদ্বোধনের পর সেই হাওয়া আরও গতি পেয়েছে। সদ্য হিন্দি বলয়ের তিনটি রাজ্যে বিপুল সংখ্যক আসনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।

অনেকেই ভেবেছিলেন কংগ্রেস হয়ত ভাল ফল করবে সেখানে। নীতীশও মনে করেছিলেন বিজেপির ফল খারাপ হবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। আর তাতেই নীতীশের মন বদল হয়েছে বলে জেডি ইউ সূত্রে  খবর। এছাড়া নীতীশের দলকে লোকসভা নির্বাচনে বেশি আসন ছাড়তে রাজি ছিল না আরজেডি। এটাও নীতীশের ক্ষোভের অন্যতম কারণ। এখানেই শেষ নয়। বহুদিন ধরেই লালুপ্রসাদ চাইছেন তাঁর ছেলে তেজস্বী যাদব যেন নীতীশকে সরিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন। বলাবাহুল্য প্রাণ থাকতে তা হতে দেবেন না নীতীশ। সব মিলিয়ে নীতীশ বুঝে গিয়েছেন বিজেপি জোটের কাছেই তিনি এখন অনেক বেশি নিরাপদ। তাই সেই ‘বড় সিদ্ধান্ত’টা তিনি নিয়ে নিয়েছেন বলেই খবর। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পালা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *