পাটনা: বুথ ফেরত সমীক্ষায় মিলেছিল জয়ের পূর্বাভাস৷ তেজস্বী যাদবের মতো তরুণ তুর্কী বিধানসভা ভোটের বাজি জিততে চলেছে বলে মনে করেছিল রাজনীতির কারবারিরা৷ কিন্তু লড়াই চলছে হাড্ডাহাড্ডি৷ মোদী ক্যারিশ্মায় এবারও বিহারে উঠেছে গেরুয়া ঝড়৷ সেখানে অনেকটাই ফিকে কংগ্রেস৷ তেজস্বী যাদব নেতৃত্বাধীন মহাগাটবন্ধন রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে৷ কিন্তু কেন এমনটা হল? তবে কি কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফায় গলতি করে ফেললেন লালু-পুত্র?
আরও পড়ুন- বিহারে সব হিসাবই বদলাতে পারে, ভোটের ফলাফল তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছে
আরজেডি সুপ্রিমো তেজস্বীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করছে এ বারের বিধানসভা নির্বাচনের উপর। বাবার নাম ছাড়াই একক ক্ষমতায় প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি৷ তেজস্বীর তারণ্যে ভর করে শক্ত জায়গা তৈরি করছিল আরজেডি৷ কিন্তু সঙ্গী কংগ্রেসের রথের চাকা টলমল৷ অনেকেই মনে করছেন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আসন কংগ্রেসকে ছেড়েই বড় ভুল করে ফেলেছেন তেজস্বী৷ বিহারে ২৪৩টি আসনের মধ্যে ৭০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস৷ রাষ্ট্রীয় জনতা দল লড়ছে ১১৪টি আসনে৷ অন্যদিকে, সিপিএম ৪, সিপিআই ৬ এবং সিপিআই (এমএল) লড়ছে ১৯টি আসনে৷ প্রতিটি দলেরই স্ট্রাইক রেটই ভালো৷ ব্যতিক্রম শুধু কংগ্রেস৷ রাগুল গান্ধীর নেতৃত্বে দেশের প্রচীন রাজনৈতিক দল রয়েছে চতুর্থ স্থানে৷ বিহারে বিধানসভা ভোট প্রচারে ময়দানে নেমেছিলেন খোদ সোনিয়া-পুত্র৷ কিন্তু এবারও সেই ম্যাজিক দেখাতে পারেননি তিনি৷ এর আগে গত লোকসভা নির্বাচনেও আরজেডি-কংগ্রেস জোট ছিল সুপার ফ্লপ৷ ৪০টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতেই জয়ী হয়েছিল এনডিএ৷ কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছিল মাত্র একটি আসন৷ অন্যদিকে, খাতাই খুলতে পারেনি আরজেডি৷
রাজ্যসভা সদস্য নাসির হুসেন বলেন, ‘‘আমাদের একথা মেনে নিতেই হবে যে রাজ্যে কংগ্রেস একটি ক্ষুদ্র দল৷ রাহুলজি রাজ্যজুড়ে প্রচার চালিয়েছেন৷ তিনি কোনও খামতি রাখেননি৷ তবে রাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রয়োজন আছে৷’’ এবারের ভোটে আশা জাগানো প্রার্থীরাও ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে৷ হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা শরদ যাদবের কন্যা সুভাষিণী শরদ যাদব এবং শত্রুঘ্ন সিনহার ছেলে লব সিনহা পিছয়ে রয়েছেন৷ রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, তেজস্বী যাদব যদি কংগ্রেসের দাবি মেনে (৭৫টি আসন) এত বেশি আসন না দিতেন (৭০ টি আসন) তাহলে অনেকটাই ভালো অবস্থানে থাকত আরজেডি৷
আরও পড়ুন- ২১-এর ভোটে ‘বেকারত্বে’র তিরেই কি বিদ্ধ হবে শাসক দল?
জনতা দল ইউনাইটেডের নেতা পবন বর্মার কথায়, ‘‘এটা স্পষ্ট যে নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প এখনও নেই৷ তাঁর বা বিজেপি’র সামনে দাঁড়ানোর কোনও ক্ষমতাই নেই কংগ্রেসের৷ আসলে আমরা জানি, দীর্ঘ রফার পর কংগ্রেসকে ৪৮টি আসন দিতে রাজি হয়েছিল আরজেডি৷ কিন্তু পরে রাজনীতির মারপ্যাচে আরও আসন পান কংগ্রেস৷ এই অসনে কংগ্রেসের পারফরম্যান্স কেমন, তা আমরা সবাই দেখতেই পাচ্ছি৷’’ রাজনীতির বিশ্লেষকদের কথায়, রাহুল গান্ধীর ব্যর্থতার ভার হয়তো বইতে হবে তেজস্বীকে৷ কংগ্রেসের ফ্লপ শো-তে স্বপ্ন ভাঙবে লালু-পুত্রের৷