Aajbikel

ভারতে কি বৈধতা পাবে সমলিঙ্গের বিয়ে? মামলা গেল পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে, মানতে নারাজ BJP

 | 
সমকামী বিয়ে

নয়াদিল্লি: সমলিঙ্গ প্রেমে রয়েছে প্রবল সমাজিক আপত্তি। রয়েছে কট্টরপন্থীদের রক্তচক্ষু। সমপ্রেমী বিবাহে আইনি স্বীকৃতি সম্ভব নয় বলে, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে কেন্দ্র। তবে সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, এই বিষয়ে রায়দান ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ৷ দেশে সমলিঙ্গের বিবাহে আইনি বৈধতা মিলবে কিনা, তা আপাতত নির্ভর করছে ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের উপর৷ কারণ আগামী ১৮ এপ্রিল ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চেই হবে এই মামলার শুনানি৷ সোমবার সমলিঙ্গ বিবাহের বিষয়টিকে ‘মৌলিক গুরুত্বের’ বিষয় বলে উল্লেখ করেছে সর্বোচ্চ আদালত। অন্যদিকে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মনে করে, সমলিঙ্গের বিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী৷ 

আরও পড়ুন- সুপ্রিম করতে ফের পিছল শুনানি, ডিএ নিয়ে জটিলতা বাড়ছেই


স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট বা বিশেষ বিবাহ আইনে ভারতে সমলিঙ্গের বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হোক, এই আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে গুচ্ছ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবছে, তা জানতে চেয়েছিল আদালত। সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে একটি হলফনামা দেওয়া হয়৷ তাতে সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা তুলে ধরে কেন্দ্র। তারা মনে করছে, ভারতে সমলিঙ্গ বিবাহ আইনি স্বীকৃতি পেলে সমাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে৷ কারণ ভারতীয় সমাজে বৈবাহিক সম্পর্ককে পবিত্র বলে মনে করা হয়৷ সমলিঙ্গ বিবাহে সেই পবিত্রতা নষ্ট হবে৷ শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে, তা আইনসভা ঠিক করবে। আইনসভাই আইন তৈরি করবে। বিচারবিভাগ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কেন্দ্র তার মতামত জানানোর পরই ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলাটি পাঠিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। আদালত মনে করছে, এই বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা সমাজের উপর একটা বিরাট প্রভাব ফেলবে।


সমকামিতা নিয়ে অতীতে যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। ২০১৮ সালের সেই রায়ে আদালত জানিয়েছিল, ভারতে সমকামিতা অপরাধ নয়৷ সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ে ‘এলজিবিটিকিউ’ সম্প্রদায়ের মানুষদের দীর্ঘ দিনের দাবি কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছিল। এই রায়ের পর এ দেশের সমকামী যুগলরা অনেকটাই ‘স্বাধীনতা’ পেয়েছেন৷ এমনকি, এ নিয়ে ছুঁৎমার্গ ভুলে পূর্বতন ধ্যানধারণার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে বলেও মনে করেন কেউ কেউ। কিছুটা হলেও বেড়েছে সমপ্রেমীদের গ্রহণযোগ্যতা৷ ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের পরেই ভারতে সমলিঙ্গের বিবাহে আইনি স্বীকৃতির দাবি আরও প্রবল হয়। এমনকি, সম্পূর্ণ আইনি স্বীকৃতি না থাকা সত্ত্বেও শীর্ষ আদালতের ওই ঐতিহাসিক রায়ের পর দেশে সমলিঙ্গের বিবাহ হয়েছে। সাক্ষী থেকেছে কলকাতাও৷


সমলিঙ্গের বিয়ের উপর ভিত্তি করে তথ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে৷ ওই তথ্যচিত্র তৈরি করেন দেবলীনা। সম্প্রতি ওড়িশায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছবিটি দেখানোর কথাও ছিল৷ তবে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে দেন কর্তৃপক্ষ। দেবলীনা বলেন, "হিন্দুত্ববাদী সরকারের কাছ থেকে চেয়ে বেশি আর কী-ই বা প্রত্যাশিত? আমি এতটুকুও অবাক নই।” 


সমলিঙ্গ বিবাহ নিয়ে বিজেপি প্রথম থেকেই খড়্গহস্ত৷ সোমবার রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে সমলিঙ্গের বিয়ের বিরুদ্ধে জোরালো সওয়াল করেন বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদী৷ তাঁর সাফ কথা, ভারতে সমলিঙ্গের বিয়েকে কোনভাবেই আইনের মান্যতা দেওয়া হয় না। সেম সেক্স ম্যারেজ একটা সামাজিক বিষয়। বিচারব্যস্থা এই বিষয়ে আইনগত বৈধতা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। 

Around The Web

Trending News

You May like