নয়াদিল্লি: একাধিক কোভিড প্রজাতির সন্ধান মিলেছে যাদের ‘হাইব্রিড কোভিড’ বলা হচ্ছে। ‘প্রজাতি’ বলা হলেও যে সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে তা আদতে দুটি প্রজাতির মিশ্রণের ফলে। তাই চিকিৎসক মহল এটিকে ঠিক করোনা ‘প্রজাতি’ না বলে ‘হাইব্রিড কোভিড’ বলছেন। যার মধ্যে রয়েছে ‘এক্সই’। সবার আগে ব্রিটেনে ধরা পড়লেও গতকাল খবর ছড়িয়েছিল যে ভারতেও এর সন্ধান মিলেছে। কিন্তু আজ কেন্দ্র স্পষ্ট করেছে যে, সেই তথ্য ভুল। দেশে এখনও এই প্রজাতি মেলেনি। আপাতত স্বস্তি মিললেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, ভারতে যদি সত্যিই এই প্রজাতি মেলে তাহলে তা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে? এর একটা আভাস মিলেছে বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে।
আরও পড়ুন- এবার স্কুলের ইউনিফর্ম হবে নীল-সাদা, থাকবে ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো, নির্দেশিকা শিক্ষা মিশনের
যে ‘এক্সই’ নিয়ে এত কথা হচ্ছে তার সংক্রমণ ক্ষমতা ওমিক্রনের থেকে ১০ শতাংশ বেশি বলে দাবি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাতেই বোঝা যাচ্ছে যে, ভারতের মতো দেশে তা কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ এখানের জনসংখ্যা বিপুল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে এই প্রজাতি সেইভাবে ভয়ানক হতে পারবে না কারণ এখানে টিকাকরণ বিপুল হারে চলছে। সাধারণ মানুষের কিছু শতাংশের হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে মনে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তাই কেউ এতে আক্রান্ত হলেও সে বিপদের সম্মুখিন হবে না বা হওয়ার সম্ভাবনা কম তা বলাই যায়। ওমিক্রনের থেকে ১০ গুণ বেশি সংক্রামক হলেও রোগ গুরুতর আকার ধারণ করবে না তা আশা করা হচ্ছে। যদিও এই নিয়ে আরও গবেষণা দরকার বলেও জানান হচ্ছে। সেই কারণে যারা টিকাপ্রাপ্ত নয়, বা আংশিক টিকা নেওয়া তাদের সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
‘এক্সই’ ছাড়াও আছে দুই ধরনের ‘হাইব্রিড কোভিড’। একটির নাম ‘এক্সডি’, অপরটি ‘এক্সএফ’। ডেল্টা এবং ওমিক্রন বিএ.১-এর যুগ্ম সংক্রমণটি হল ‘এক্সডি’। আর ইংল্যান্ডের ডেল্টা এবং ওমিক্রন বিএ.১-এর যুগ্ম সংক্রমণকে ‘এক্সএফ’ বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, ওমিক্রন বিএ.১ এবং বিএ.২-এর যুগ্ম সংক্রমণের ফলে তৈরি হয়েছে ‘এক্সই’। তাই এই প্রজাতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ‘হু’ বলছে, ‘হাইব্রিড কোভিড’ হলে মূলত দশটি উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। সেগুলি হল, জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশি, ত্বক চুলকানো, গলা খুসখুস, চোখ জ্বালা, পেটের গণ্ডগোল, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, স্নায়ুর সমস্যা, অনেক সময়ে বকের রং বদলে যাওয়া। এমন কোনও উপসর্গ দেখা গেলেই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে পরামর্শ দিচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন: ‘হাইব্রিড কোভিড’ নিয়ে বড় আশঙ্কা করছে ‘হু’, এই লক্ষণগুলি চিন্তা বাড়াবে
তবে ভারত আপাতত ‘সুরক্ষিত’ আছে বলেই আশ্বস্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, মুম্বইয়ে বিদেশ ফেরত এক যাত্রীর করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু সে নতুন কোনও প্রজাতিতে আক্রান্ত নয়। ‘এক্সই’ প্রজাতিতে সে আক্রান্ত হয়েছে এমন খবর রটিয়ে দেওয়া হয়। এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল বলে দাবি করছে তারা। এমনকি মহারাষ্ট্র সরকারের তরফেও টুইট করে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এই তথ্য জানানো হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বাসিন্দা যে মহিলা কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন তার জিনোমের সঙ্গে ‘এক্সই’ ভ্যারিয়েন্টের মিল পাওয়া যায়নি। তিনি সম্পূর্ণ উপসর্গহীনও।