নয়াদিল্লি: মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার চার মাসের মধ্যেই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন উত্তরাখণ্ডের তীরথ সিং রাওয়াত। বেশ কয়েকদিন ধরেই জল্পনা ছিল যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন। অবশেষে গত কাল রাতে পদত্যাগ করেন তিনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার্তা দিতেই বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে সরানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে! কারণ তিনিও বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হননি।
ঘটনা হল, বিধানসভা নির্বাচনে না জিতেও মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াত। ঠিক একেবারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত। কিন্তু নিয়ম হল, বিধানসভায় না জিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলে কমপক্ষে ছয় মাসের মধ্যে উপ নির্বাচনে জিততে হয়। কিন্তু এখন করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য কোন রাজ্যের উপনির্বাচনে আগ্রহী নয় নির্বাচন কমিশন। সেই প্রেক্ষিতে মনে করা হচ্ছে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে পথ থেকে সরিয়ে পরোক্ষে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি। আসলে বাংলার নির্বাচনের পর নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার কারণে বিজেপি নেতৃত্ব থেকে বারবার আক্রমণ করা হচ্ছে এবং কটাক্ষ করা হচ্ছে তাঁকে। এবার এই একই পরিস্থিতির সম্মুখীন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করায় অবশ্যই এই সুযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে বিজেপি নেতৃত্ব আরো বেশি আক্রমণ করবে তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন- ফের ভোট বঙ্গে, ‘ভাগ্য পরীক্ষা’ মুখ্যমন্ত্রীর! সম্মতি নির্বাচন কমিশনের!
যদিও গোটা পরিস্থিতির অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। উত্তরাখণ্ডে আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন হয়েছে, তাই সেখানে এখন উপনির্বাচন না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের সবে মাত্র দুই মাস হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তাই এখানে এই মুহূর্তে উপনির্বাচনে করার যুক্তি নেই। যদিও সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ দাবি করেছেন যে রাজ্যে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাই এখন উপ নির্বাচন হতেই পারে। এক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন করানোর জন্য বার্তা দিয়েছেন।