এক রত্নগর্ভার জীবনাবসান, কেমন ছিল হীরাবেন মোদীর জীবন?

এক রত্নগর্ভার জীবনাবসান, কেমন ছিল হীরাবেন মোদীর জীবন?

21c4b3d58ea380e1dceb0086d8f9d916

আমদাবাদ: গতকালই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন প্রধানমন্ত্রীর মা হীরাবেন মোদী৷ আমদাবাদে এসে মায়ের সঙ্গে দেখাও করে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু, শুক্রবার সকালে ঘটে গেল অঘটন৷ জীবনাবসান ঘটল হীরাবেনের৷ আজ সকালে আমেদাবাদের ইউএম মেহতা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি৷ নিভল এক রত্নগর্ভার জীবন প্রদীপ। 

আরও পড়ুন- শোকের শুক্রবার! পরপর খারাপ খবরে ঘুম ভাঙল দেশের

মায়ের সঙ্গে না থাকলেও, মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি, ভালোবাসার কোনও ত্রুটি ছিল না৷ যে কোনও কাজের আগে মায়ের কাছে ছুটে আসতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ নিতেন মায়ের আশীর্বাদ৷ সদ্য সমাপ্ত গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের সময় যখন ভোট দিতে গিয়েছিলেন, তখনও গান্ধীনগরে গিয়ে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে এসেছিলেন নমো। তবে আজ তিনি মাতৃহারা৷ প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনেই নাকি থাকে এক নারীর অবদান৷ নরেন্দ্র মোদীর ক্ষেত্রে সেই নারী হলেন হীরাবেন৷ তাঁর আদর্শে নিজেকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ 

১৯২৩ সালের ১৮ জুন গুজরাটের মেহসানা জেলার বিসানগরের এক সাধারণ পরিবারে জন্ম হীরাবেনের৷ ছোট থেকেই কষ্ট দেখেছেন তিনি৷ অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে আসেন মোদী পরিবারের৷ সেখানেও প্রতিদিন ছিল সংগ্রাম৷ স্বামী দামোদরদাস মুলচাঁদ মোদী ছিলেন পেশায় চা বিক্রেতা৷ ফলে অভাব অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী৷ 

বছর কয়েক আগে বিসানগরের দীপদা দরওয়াজার আদি বাড়ি বিক্রি করে  গান্ধীনগরের নতুন বাড়িতে থাকতে শুরু করেছিলেন হীরাবেন। ছোট ছেলে পঙ্কজ মোদীর সঙ্গে গান্ধীনগরের এই বাড়িতেই থাকতেন তিনি। বয়স ১০০ ছুঁলেও, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সচল ছিলেন৷ একা হাঁটাচলাও করতে পারতেন৷ এমনি বাড়ির প্রায় সব কাজ নিজের হাতেই করতেন। সদ্য সমাপ্ত গুজরাট নির্বাচনে হুইল চেয়ারে বসেই ভোট দিতেও গিয়েছিলেন হীরাবেন৷

ছেলে প্রধানমন্ত্রী হলেও মায়ের জীবন ছিল আদ্যন্ত সাদামাটা৷ কোনও রকম বিলাসিতা ছিল না তাঁর৷ বাড়ির খাবারেই তিনি ছিলেন স্বচ্ছন্দ্য৷ খিচুড়ি, ডাল, ভাত খেতে ভালোবাসতেন প্রধানমন্ত্রীর মা। লপসি ছিল বড্ড পছন্দের৷ মায়ের ১০০ তম জন্মদিনে তাঁর আশীর্বাদ নিতে এসেছিলেন নমো৷ সেই সময় মায়ের জন্য হাতে করে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর প্রিয় লপসি৷ প্রধানমন্ত্রী যখনই মায়ের সঙ্গে আহার করতেন, তখন বেশিরভাগ সময়ই তাঁর পাতে দেখা যেত রুটি, সবজি, ডাল, ভাত, স্যালাডের মতো সাধারণ খাবার৷ তবে, আইসক্রিম ছিল তাঁর বিশেষ পছন্দের৷

নিজে পড়াশোনার সুযোগ পাননি হীরাবেন৷ কিন্তু, সন্তানরা যাতে সুশিক্ষিত হতে পারে, তার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছেন৷ বাড়িতে-বাড়িতে এবং চায়ের দোকানগুলিতে দুধ সরবরাহ করা থেকে দিনমজুরি এমনকি গৃহপরিচারিকার কাজও করেন হীরাবেন। অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সন্তানদের বড় করে তোলেন তিনি৷ পাশাপাশি স্থানীয় শিশুদের নিজের উদ্যোগে পড়াশোনাও শেখাতেন হীরাবেন মোদী।