নয়াদিল্লি: সরকারি ভাষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার ছিল কমিটির ৩৭ তম বৈঠক। সেই বৈঠক শেষেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, হিন্দি ভাষাকেই ইংরেজি ভাষার বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। সকল রাজ্যের মানুষের একে অপরের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলা উচিত। শুরু থেকেই আন্দাজ করা গিয়েছিল যে শাহের এই মন্তব্যের পর আলোড়ন সৃষ্টি হবে দেশে। হলও তাই। একে একে সকল বিরোধীরা এই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী ও দুই অসহায় ছেলেকে ছেড়ে পালাল বাবা
তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সিপিএম, কংগ্রেস, সকলেই অমিত শাহের এই মন্তব্য খুশি নয়। তাদের বক্তব্য, আবার আগের মতো হিন্দি আগ্রাসন দেখানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে তারা এও দাবি করছে যে, দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি তার থেকে নজর ঘোরাতেই এখন এই মন্তব্য করেছেন শাহ। তিনি চান যাতে কেউ অর্থনীতি, মুদ্রাস্ফীতি এইসব নিয়ে কথা না বলুক। কিন্তু এইভাবেও হিন্দি আগ্রাসন কেউ মেনে নেবে না। বিরোধীরা স্পষ্ট বলছে যে, হিন্দি কখনই দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল না, তা হতেও দেবেন না তারা। তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হয়েছে, হিন্দি কিন্তু ভারতের রাষ্ট্র ভাষা নয়। দেশের কোনও রাষ্ট্র ভাষা নেই। এখানে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য আছে। বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের ভাষা রয়েছে। এখন হিন্দিকে ইংরেজির বিকল্প হিসাবে সামনে এনে দেশপ্রেম জাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
আসলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মূল বক্তব্য ছিল, হিন্দি ভাষাকেই ইংরেজি ভাষার বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। সরকারি ভাষাকে দেশের ঐক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত করার সময় এসেছে। তাই তাঁর ‘নিদান’, বিভিন্ন রাজ্যের মানুষকে একে অপরের সঙ্গে এই হিন্দি ভাষাতে কথা বলতে হবে। তিনি এও উল্লেখ করেছেন, হিন্দিকে ইংরেজির বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত, স্থানীয় ভাষা নয়। তাঁর আরও সংযোজন, জাতীয় স্তরে হিন্দির গুরুত্ব বাড়ানো হলে সরকারি কর্মী এবং যুবসমাজের মধ্যে হিন্দির প্রতি ঝোঁক বাড়াতে হবে। হিন্দি ভাষাই একমাত্র ভারতীয়দের সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ অটুট রাখবে বলেই মনে করেন তিনি। আসলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, কমবেশি ৭০ শতাংশ সরকারি কাজ এখন হিন্দিতেই হয়। তাই আগামী দিনে সেটা আরও বাড়াতে চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।