নয়াদিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনার মাঝেই লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার আরও একবার সংসদে বিবৃতি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর কোনও শক্তি সীমান্তে ভারতীয় সেনার টহল রুখতে পারবে না৷
আরও পড়ুন- আজ ৭০-এ পা নমোর, রইল তাঁর ছেলেবেলার অজানা কিছু কথা
এদিন লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় সেনার টহলদারি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস সাংসদ একে অ্যান্টনি৷ তিনি জানতে চান, সীমান্তে কিছু পোস্টে কি ভারতীয় সেনাকে টহল দিতে দিচ্ছে না চিন? অ্যান্টনির এই প্রশ্নের জবাবে রাজনাথ বলেন, ‘‘ এটাই সীমান্ত সংঘর্ষের মূল কারণ৷’’ সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘‘সীমান্তে রীবত্বের সঙ্গে প্রহরা দিচ্ছে আমাদের সেনা৷ তবে নিরাপত্তার কারণে এ সম্পর্কিত সংবেদনশীল ও প্রযুক্তিগত বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয়৷’’ তবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘ সীমান্তে পেট্রোলিং প্যাটার্ন ঐতিহ্যবাহী৷ পৃথিবীর এমন কোনও শক্তি নেই, যারা ভারতীয় সেনাকে টহল দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে৷’’
এদিন রাজনাথ আরও বলেন, ‘‘আমরা সবাই এক৷ এই সভাকক্ষ প্রমাণ করেছে, যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন আমরা একসঙ্গে তার বিরুদ্ধে লড়ব৷ এটা সত্যি যে, সীমান্তে সংঘাত টহল দেওয়াকে কেন্দ্র করেই ঘটেছে৷ তবে কেউ সীমান্তে টহল দেওয়া থেকে আমাদের বিরত রাখতে পারবে না৷ টহলদারির ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন ঘটবে না৷ কিন্তু সংবেদনশীলতার কারণে সমস্ত বিষয়টি বলা সম্ভব নয়৷’’ লাদাখ ইস্যুতে বিবৃতি দিতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, “চিন এখনও বেআইনিভাবে কেন্দ্রশাসিত লাদাখের প্রায় ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি দখল করে রেখেছে। এছাড়াও পাকিস্তান শিনো-পাকিস্তান এলাকা থেকে আরও ৫ হাজার ১৮০ বর্গ কিলোমিটার চিনের হাতে তুলে দিয়েছে।’’ এছাড়াও চিন ভারতের দখলে থাকা আরও ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি নিজেদের বলে দাবি করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
এর আগে সোমবার লোকসভায় রাজনাথ সিং বলেছিলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবেই সীমান্ত সমস্যার সমাধান চায় ভারত৷ কিন্তু বারবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় আগ্রাসনের চেষ্টা করেছে লাল ফৌজ৷ যার ফলে প্যাংগং, গালওয়ান উপত্যকার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা বেড়েছে৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছে, চিন চা মানতে চাইছে না। তার জন্যই লাদাখে আমরা অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।’’
আরও পড়ুন- রাজনাথকে ধমকে মাস্ক পরালেন উপরাষ্ট্রপতি, প্রশ্ন তুললেন সাংসদরা
মে মাসের গোড়া থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় বিপুল সেনা মোতায়েন করেছে চিন৷ চিন আগ্রাসন রুখতে পাল্টা বাহিনী মোতায়েন করেছে ভারত৷ ১৫ জুন সীমান্তে রক্তও ঝরেছে৷ দুই বাহিনীর সংর্ষে মৃত্যু হয়েছে ২০ ভারতীয় জওয়ানের৷ সোমবার ভারতীয় সেনার ভূসী প্রশংসা করেছিলেন রাজনাথ৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের জওয়ানরা সীমান্তে চিনকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। গালওয়ানে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চিনের পক্ষে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার যেখানে সংযম দেখানোর দরকার, জওয়ানরা সেখানে সংযম ও ধৈর্য দেখিয়েছে।’’