নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে ভারতবাসী লড়াই চলিয়ে যাচ্ছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ভারতও এক কঠিন লড়াইয়ে সামিল৷ বহু মানুষ নিজের পরিবার-পরিজনকে হারিয়েছে৷ সেই সকল পরিবারের প্রতি সববেদনাও জানান তিনি৷ সেই সঙ্গে তাঁর তাঁর ঘোষণা, ১৮ বছর থেকে সকলকে বিনামূল্যে টিকা দেবে কেন্দ্র৷
আরও পড়ুন- শুধু ভোটে লড়তে যাব না, অন্য রাজ্য জয় করতে যাব: অভিষেক
মোদী বলেন, গত ১০০ বছরে এত বড় মহামারী আসেনি৷ আধুনিক বিশ্ব এত বড় মহামারী দেখেনি৷ এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশ একসঙ্গে লড়াই করছে৷ কোভিড হাসপাতাল থেকে আইসিইউ ব্যাপক চিকিৎসা পরিকাঠানো তৈরি করা হয়েছে৷ দেশে মেডিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ এত অক্সিজেনের কখনও প্রয়োজন হয়নি৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করা হয়েছে। খুব কম সময় তরল অক্সিজেনের উৎপাদন ১০ গুণ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অক্সিজেন আনা হয়েছে। জরুরি ওষুধের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। বিদেশ থেকেও ওষুধ আনার ক্ষেত্রে কোনও কসুর রাখা হয়নি৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার মতো অদৃশ্য রূপ বদলকারী ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার অন্যতম অস্ত্র কোভিড প্রোটেকল৷ এই লড়াইয়ে ভ্যাকসিন আমাদের কাছে সুরক্ষা কবজ৷
নমো বলেন, সারা বিশ্বে ভ্যাকসিনের চাহিদার তুলনায় উৎপাদনকারী দেশ ও সংস্থা খুব কম৷ এই অবস্থায় ভারতের হাতে নিজের ভ্যাকসিন রয়েছে৷ অতীতে বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন পেতে দীর্ঘ সময় লাগত৷ বিদেশে ভ্যাকসিনের কাজ শেষ হয়ে গেলেও আমাদের এখানে শুরু হত না৷ ২০১৪ সালে ৬০ শতাংশ টিকাকরণ হত৷ যে হারে টিকাকরণ চলছিল, তাতে ১০০ শতাংশ টিকাকরণের জন্য কমপক্ষে ৪০ বছর লাগত। ক্ষমতায় এসে বিজেপি ইন্দ্রধনুষ প্রকল্প চালু করা হয়৷ মিশন মুডে কাজ করায় ৫-৬ বছরে ৬০ শতাংশ থেকে টিকাকরণ ৯০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে৷
করোনা পরিস্থিততে ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশকে নিয়ে আতঙ্ক ছিল৷ ভারতে দুটি মেড ইন ইন্ডিয়া টিকা রয়েছে৷ পরিশ্রম করলে মনোবল স্বচ্ছ থাকলে সব কাজ করা সম্ভব হয়৷ ভারতের বিজ্ঞানীরা টিকা তৈরি করেছে৷ বাচ্চাদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে৷ পাশাপাশি তিনি জানান, টিকাকরণের জন্য রাজ্যগুলিকে আর কোনও অর্থ দিতে হবে না৷ ২১ জুন থেকে ১৮ উর্ধ্ব সকলকে টিকা দেবে কেন্দ্র৷ আগামী দুই সপ্তাহ একযোগে কাজ করবে কেন্দ্র-রাজ্য৷ প্রধানমন্ত্রী জানান, এবার থেকে দেশে উৎপাদিত মোট ভ্যাকসিনের ৭৫ শতাংশই কিনে নেবে ভারত সরকার। সেই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে রাজ্য সরকারগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে। এবার থেকে রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিনের জন্য টাকা খরচ করতে হবে না। পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রেও টিকাকরণ চলবে৷